

অনেকেই খেয়াল না করেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন। কখনো আড্ডায়, কখনো উৎসবে, আবার কখনো মন খারাপের সময়। এক-দুদিন হলে সমস্যা নেই, কিন্তু যদি এটা অভ্যাসে পরিণত হয়, তাহলে শরীরের জন্য ডেকে আনতে পারে বিপদ। তাই বাড়তি খাওয়া কমাতে কিছু সহজ নিয়ম মানলে উপকার পেতে পারেন।
অনেক সময় আমরা ক্ষুধা নয়, চোখের লোভে বা পরিবেশের কারণে বেশি খাই। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের ওজন বাড়ায়, হজমের সমস্যা তৈরি করে এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
হিউস্টন মেথডিস্ট হাসপাতালের ওয়েলনেস ডায়েটিশিয়ান কাইলি অ্যারিনডেল বলেন, ‘ওভারইটিং বা বাড়তি খাওয়া মানে হলো শরীরের চাহিদার চেয়ে বেশি খাবার খাওয়া। মাঝে মাঝে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু অভ্যাসে পরিণত হলে তা বিপজ্জনক।’
তার মতে, বেশি খেলে তাৎক্ষণিকভাবে পেটব্যথা, গ্যাস, বমিভাব বা হজমের গোলমাল দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদে কোলেস্টেরল ও রক্তশর্করা বেড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
এখন দেখুন, অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে ডায়েটিশিয়ান কাইলি অ্যারিনডেলের দেয়া ১০টি সহজ টিপস-
পরিমিত খাবার খান : খাবারের প্যাকেটে পরিমাণ লেখা থাকে, সেটা মানার চেষ্টা করুন। ছোট প্লেটে খাবার দিলে স্বভাবতই কম খাওয়া হয়।
ফাইবারযুক্ত খাবার বাড়ান : শাকসবজি, ফল ও পূর্ণ শস্য পেট ভরা রাখে, ফলে বারবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে।
দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকবেন না : অনেকক্ষণ ক্ষুধার্ত থাকলে পরের খাবারে বেশি খেয়ে ফেলবেন।
সহজে খাওয়া যায় এমন খাবার কমান : চিনিযুক্ত, বেশি লবণযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
পানি পান করুন : তৃষ্ণাকে অনেক সময় ক্ষুধা মনে হয়। খাবার আগে পানি খেলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে।
মনোযোগ দিয়ে খাবার খান : টিভি বা মোবাইল দেখে খেলে বেশি খাওয়া হয়। খাবার সময় মনোযোগ রাখুন।
ধীরে ধীরে খান : ধীরে খেলে শরীর বুঝতে পারে যে পেট ভরে গেছে।
দ্বিতীয়বার খাবার নেওয়ার আগে ভাবুন : আরেকটু খাওয়ার ইচ্ছে হলে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। সত্যিই ক্ষুধা থাকলে তবেই খান।
খাওয়ার সময় টিভি বন্ধ রাখুন : মনোযোগ অন্যদিকে গেলে বুঝতেই পারবেন না কখন বেশি খেয়ে ফেললেন।
নিজেকে দোষারোপ করবেন না : একদিন বেশি খেয়ে ফেললে সমস্যা নেই। নিজেকে ক্ষমা করে পরের দিন আবার নিয়মে ফিরুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়ার পেছনে মানসিক কারণ কাজ করে। দুঃখ, একাকিত্ব বা স্ট্রেস থেকে অনেকেই খাবারের দিকে ঝোঁকে, এটাই ‘ইমোশনাল ইটিং’। এমন হলে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সাহায্য নেওয়া ভালো।
অ্যারিনডেল মনে করিয়ে দেন, খাবার আমাদের শক্তি দেয়, তাই সেটিকে উপভোগ করুন সচেতনভাবে, অভ্যাসের বশে নয়।
সূত্র : HoustonMethodist
মন্তব্য করুন