তুরস্কের পার্লামেন্ট মঙ্গলবার সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যাতে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা এবং ইরানে সাম্প্রতিক হামলার বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানানো হয়েছে। স্পিকার নুমান কুর্তুলমাস স্বাক্ষরিত এই প্রস্তাবে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, তুর্কি সংসদ ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী অবৈধ এবং গণহত্যামূলক নীতিগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, যা সমগ্র বিশ্বের জন্য হুমকি।
প্রস্তাবে গাজায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষের হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তীতে ইরানে চালানো হামলাকে ইসরায়েলের একটি আঞ্চলিক সংঘাত-প্রসূত কৌশল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যা শান্তি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
তাতে আরও বলা হয়েছে, ‘দশকের পর দশক ধরে দখলদারিত্ব, দমনপীড়ন ও বৈষম্যের পাশাপাশি, আজ ফিলিস্তিনিরা গণহত্যা, খাদ্য সংকট এবং মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি সরকার ও সেনাবাহিনী শিশু ও বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করে মানবতার বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অপরাধ করেছে।’
তুর্কি পার্লামেন্টের এই প্রস্তাবে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকেও উসকানিমূলক এবং ‘আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ানো’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের চলমান হামলা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার একটি বিস্তৃত যুদ্ধ ছড়িয়ে দেওয়ার কৌশল গ্রহণ করেছে তা প্রমাণ করে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তুর্কি জাতীয় পার্লামেন্ট অঞ্চলজুড়ে সমস্ত নিরীহ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে এবং যুদ্ধ ও ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকারের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তুর্কি সংসদ বলেছে, ‘এই সরকারকে গণহত্যাকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
তুর্কি পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের আগ্রাসনের মুখে যারা এখনো নীরব, তাদের আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনীতির ভিত্তিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। আমরা শান্তি ও মানবজীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাব। ন্যায়ভিত্তিক, টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমরা আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।
এই বিবৃতি আঞ্চলিক শান্তির পক্ষে তুরস্কের অনড় অবস্থান ও ইসরায়েলের যুদ্ধনীতি প্রতিরোধে তার আন্তর্জাতিক ভূমিকার প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন