

ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মুকাল্লায় জোট বাহিনীর বিমান হামলা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। এই হামলাকে ঘিরে উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে ইয়েমেন থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। খবর আলজাজিরার।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুর্কি আল-মালিকি মঙ্গলবার ভোরে চালানো সামরিক অভিযানের বিভিন্ন ছবি ও তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, মুকাল্লা বন্দরে প্রবেশের পর দেখা যায়, দুটি জাহাজে ৮০টির বেশি যানবাহন এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদভর্তি কনটেইনার ছিল। তার দাবি, এসব যানবাহন, কনটেইনার ও আমিরাতি সেনাদের সৌদি আরবকে না জানিয়ে আল-রাইয়ান ঘাঁটিতে স্থানান্তর করা হয়।
মেজর জেনারেল আল-মালিকি বলেন, অভিযানের সময় জোট বাহিনী সম্পূর্ণভাবে যুদ্ধের নিয়মকানুন মেনে চলেছে।
এদিকে সৌদি আরবের অভিযোগের পরপরই ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় ইউএই। আবুধাবি জানায়, ইয়েমেনে তাদের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ শেষ হয়েছে। এর আগে রিয়াদ অভিযোগ করেছিল, ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে ইউএই।
মঙ্গলবার এই ঘোষণা আসে এমন এক সময়ে, যখন ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএইকে তাদের সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়। সৌদি আরবও এই দাবির প্রতি সমর্থন জানায়।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী মুকাল্লা বন্দরে হামলা চালায়। রিয়াদের দাবি, ওই বন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্পর্কিত একটি অস্ত্রের চালান ছিল, যা ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এসটিসি) কাছে পাঠানো হচ্ছিল।
উল্লেখ্য, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুরুতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের পক্ষে থাকলেও চলতি মাসে সৌদি সমর্থিত সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে এসটিসি। দক্ষিণ ইয়েমেনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে তারা এই আক্রমণ চালায়।
এসটিসির সাম্প্রতিক অগ্রগতিতে ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা ভেঙে পড়ে। তারা হাদরামাউত ও মাহারা প্রদেশসহ দক্ষিণ ইয়েমেনের বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নেয়, যা সৌদি আরবের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই করা হয়েছে। হাদরামাউত সৌদি সীমান্তবর্তী এবং মাহারা প্রদেশ ওমান সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।
সৌদি আরব মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, হাদরামাউত ও মাহারা প্রদেশে সামরিক অভিযান চালাতে এসটিসির ওপর ইউএই যে ‘চাপ প্রয়োগ করেছে’, তাতে তারা হতাশ। রিয়াদের মতে, এসব পদক্ষেপ তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।
মন্তব্য করুন