মানবিক দিক বিবেচনা করে অসহায় গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানবাধিকার কর্মীরা। তবে সেখানে ত্রাণ পৌঁছে দিতে যাওয়া এই সাহসী অভিযাত্রীদের থামিয়ে দেয় ইসরায়েলি নৌ কমান্ডোরা। আটক করে প্রায় ৫০০ মানবাধিকার কর্মীকে। মোট ৪৫টি জাহাজ নিয়ে তারা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ব্যানারে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে পুরো বহরকে আটক করে নিয়ে যায় ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের হাতে আটককৃতদের মধ্যে ১৪১ জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকিদের এখনো কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। তাকে বর্তমানে নেগেভের কেৎজিওত কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ইমেইলের বরাতে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, গ্রেটা দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে জানিয়েছেন, তিনি মারাত্মক পানিশূন্যতায় ভুগছেন, পর্যাপ্ত খাবার ও পানি পাচ্ছেন না। কারাগারের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, ছারপোকা এবং শক্ত মেঝেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা সব মিলিয়ে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এমনকি তাকে জোর করে পতাকা হাতে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল শনিবার অন্তত ১৩৭ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়ে তুরস্কে পাঠিয়েছে। এদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, মরক্কো, সুইজারল্যান্ড, তিউনিশিয়া ও তুরস্কের নাগরিক রয়েছেন।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে অন্তত ৩৬ জন তুর্কি নাগরিক। বাকি অধিকারকর্মীরা নিজেদের দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে নিজ নিজ দেশে ফেরত যাবেন।
অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, ফ্লোটিলা কর্মীরা খুব অল্প ত্রাণসামগ্রী বহন করেছিলেন এবং ইসরায়েলের মাধ্যমে তা গাজায় পাঠাতে রাজি হননি। তাদের অভিযোগ এটি মূলত উসকানি সৃষ্টির অভিযান। তবে আন্তর্জাতিক মহল এ অভিযানে ইসরায়েলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
মন্তব্য করুন