

বিয়ে বাড়িতে মাইক বাজানোর অপরাধে বেত্রাঘাতের শিকার হলেন এক কন্যা এবং তার মা-বাবাসহ পরিবারের সকলে। ক্ষমা চেয়েও মেলেনি পরিত্রাণ, উপরন্তু চাপানো হয়েছে মোটা অঙ্কের জরিমানা। জরিমানা দিতে না পারায় জামাতার উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশাটি পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে। স্থানীয় একটি অনানুষ্ঠানিক বিচার সভায় এই রায় দেওয়া হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি ওই পরিবারে তাদের কন্যার বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। সেই উপলক্ষে মাইক ব্যবহার করেছিলেন। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ওই পরিবারের কাছে এর জবাব চাইতে গেলে সেখানে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সেখানে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন সালিশদার এ বিচার সভা বসান।
কন্যার বাবা শাহজাহান বলেন, আমি গরিব মানুষ আমার মেয়ের বিয়েতে শখ করে মাইক বাজিয়েছি। এর জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন পরিবারের সবাইকে মারধর করে। তারা আবার আমাদের জন্য সালিশ বাসায়। সালিশদাররা আমাদের সবাইকে ১৫টি করে বেত্রাঘাতের রায় দেয়। আমি এবং পরিবারের সবাই বার বার ক্ষমা চাওয়ার পরেও তারা কর্ণপাত করেননি। সবাইকে বেত্রাঘাত করার পর তারা ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। জরিমানার টাকা জোগাড় করতে না পারায় আমার মেয়ের জামাইয়ের অটোরিকশা আটকে রাখেছে। সমাজে অনেকের কাছে গিয়েছি কোনো বিচার পাইনি।
সালিশে উপস্থিত থাকা একজন সালিশদার বলেন, মাইক বাজানোর বিষয়ে আফসার জিজ্ঞেস করার কারণে হট্টগোল বাধে। ওখানে আফসারের ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে গিয়েছে। যদিও আমরা তার সঠিক প্রমাণ পাইনি। তবুও আমাদের মধ্যে একজন সালিশদার এই ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ হাজার টাকা দিতে রায় দেয়। সালিশে নারীদেরকে বেত দেওয়া হয়নি, পুরুষদেরকে দেওয়া হয়েছে। নারীদেরকে শাসন করার জন্য ঘরের মুরুব্বি হিসেবে শাহাজানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনিই বেত্রাঘাত করেছেন।
সাগরিয়া ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক এসআই ফরহাদ হোসেন বলেন, বিয়েতে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমি উভয় পক্ষকে বলেছি আইনি ব্যবস্থা নিতে। তারা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করায় আমি আর সেখানে থাকিনি। এরপরে তারা আমাকে আর কিছু জানায়নি। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন