

ইরান কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখে পড়েছে ইরান। দেশটি এ পরিস্থিতি উত্তরণে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি বর্ষণের কার্যক্রম শুরু করেছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইরনার বরাতে রোববার (১৬ নভেম্বর) ডেইলি সাবাহর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইআরএনএ শনিবার রাতে জানিয়েছে, চলতি পানি বছরের প্রথম ক্লাউড সিডিং ফ্লাইটটি উর্মিয়া হ্রদ অববাহিকায় পরিচালিত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উর্মিয়া ইরানের সবচেয়ে বড় লেক হলেও দীর্ঘ খরা ও পানি সংকটে প্রায় সম্পূর্ণ শুকিয়ে বিশাল লবণভূমিতে পরিণত হয়েছে। পূর্ব আজারবাইজান ও পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশেও শিগগিরই একই ধরনের অভিযান চালানো হবে।
ক্লাউড সিডিং কী?
বিমান থেকে মেঘের মধ্যে সিলভার আয়োডাইড, লবণ বা অন্যান্য কণা ছড়িয়ে বৃষ্টিপাত ঘটানোর প্রযুক্তিকেই ক্লাউড সিডিং বলা হয়। ইরান গত বছর জানিয়েছিল, এ প্রযুক্তি তারা নিজস্বভাবে উন্নয়ন করেছে।
শনিবার ইরনা জানিয়েছে, ইলাম, কেরমানশাহ, কুর্দিস্তান, লোরেস্তানসহ পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি প্রদেশে বৃষ্টি হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমের পশ্চিম আজারবাইজানেও বৃষ্টিপাত দেখা গেছে।
দেশটির আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর দীর্ঘমেয়াদি গড়ের তুলনায় বৃষ্টিপাত কমেছে প্রায় ৮৯ শতাংশ। এটি ইরানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শুষ্ক শরৎ মৌসুম।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো তেহরান-সংলগ্ন আলবোর্জ পর্বতমালার তোচাল পাহাড়ে মৌসুমের প্রথম তুষারপাতের দৃশ্যও দেখানো হয়েছে।
ইরান মূলত শুষ্ক জলবায়ুর দেশ এবং বহু বছর ধরেই সেখানে তীব্র খরা ও তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অঞ্চলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, তেহরানে এ বছর গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, আর দেশের অর্ধেক প্রদেশে মাসের পর মাস এক ফোঁটা বৃষ্টিও পড়েনি। ফলে বিভিন্ন প্রদেশে পানি সরবরাহকারী জলাধারগুলোর পানির স্তর নেমেছে রেকর্ড নিম্নে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেন, শীত শুরুর আগে বৃষ্টি না হলে তেহরান পর্যন্ত খালি করতে হতে পারে, যদিও তিনি বিস্তারিত জানাননি।
মন্তব্য করুন