ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাব্যতা নিয়ে গত বছর থেকেই দূতায়ালি করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এই তৎপরতা বেশ কাজে দিয়েছেও বলা যায়। কারণ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মনোভাব বেশ ইতিবাচক।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দেখা গেছে। শুধু কি তাই, ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবেও দেখতে চান মোহাম্মদ বিন সালমান। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হলেও ইরান নিয়ে অবশ্য সতর্ক মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী এই নেতা। তার ভাষ্য, তেহরান পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হলে রিয়াদকেও একই শক্তি অর্জন করতে হবে। নয়তো সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
২০২০ সাল থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে এই ইস্যুতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে তুরস্কও। এবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
সাক্ষাৎকারে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আলোচনা বাতিল করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, এমন তথ্য সঠিক নয়। প্রতিদিনই আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে।
এ সময় চলমান আলোচনা গুরুত্বসহকারে নিয়ে তা শেষ পর্যন্ত কোথায় পৌঁছায় সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন বলেও জানান তিনি। সাক্ষাৎকারে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানে আবারও জোর দেন যুবরাজ মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমরা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রস্তাব পেয়েছি। আমাদের জন্য ফিলিস্তিন সংকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমরা এই বিষয়ে সন্তোষজনক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করি এটি এমন একটি জায়গায় পৌঁছাবে যাতে ফিলিস্তিনিদের জীবন সহজ হয় এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠতে পারে।
এ সময় ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সতর্ক করে বিন সালমান জানান, যদি তেহরান পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হয় তবে রিয়াদকেও একই শক্তি অর্জন করতে হবে। নয়তো সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলে মতো বিতর্কিত এই সৌদি নেতার।
মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, যেকোনো দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া নিয়ে আমরা সতর্ক আছি। এমনটা ঘটলে খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে। যদি তারা পরমাণু অস্ত্রের মালিক হয় তবে আমাদেরও তা অর্জন করতে হবে। নিরাপত্তা ও মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যের স্বার্থেই আমাদের পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে হবে। তবে আমরা সেটা চাই না।
এর আগে, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বেশ কয়েবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল। এমনকি প্রয়োজনে তেহরানের ওপর সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছে তেলআবিব প্রশাসন। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামলা চালাতে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা ক্রমেই বাড়িয়ে তুলছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী। আর তেহরানের এমন শক্তি বৃদ্ধির বিষয়কে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর জন্যও হুমকি হিসেবে দেখছে সৌদি আরব।
মন্তব্য করুন