গাজায় মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে গাজায় এক ফিলিস্তিনি নারীর কান্নার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে যে নারীকে দেখা যায় তিনি পেশায় গাজার একটি হাসপাতালে কর্মরত একজন নার্স। তিনি যখন গাজায় অনবরত সংঘাতে আহতদের হাসপাতালে সেবা দিচ্ছেন, তখন স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ আসে। স্বামীর মৃত্যুর সংবাদে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন তিনি।
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার স্বামী শহীদ হয়েছে। শোনো হে জনতা, আমি যখন হাসপাতালে ছিলাম, আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন। আমার বাবাও শহীদ হয়েছিলেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। এ সময় আরও কয়েকজন স্বজনকেও কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। মুহূর্তেই এক বিষাদময় পরিস্থিতির উদ্ভব হয় খোলা আকাশের নিচে, হাসপাতাল সংলগ্ন ব্যস্ত সড়কে।
খান ইউনিস এলাকার সবচেয়ে বড় নাসের হাসপাতালে প্রতিনিয়ত আহতদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আসছে। হাসপাতালগুলোতে খালি নেই বেড। বাইরে টানানো হয়েছে অস্থায়ী তাঁবু। এসবের ওপর যুক্ত হয়েছে খাবার পানি ও বিদ্যুতের সংকট। সব মিলিয়ে এ এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।
নাসের হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগপ্রধান মোহাম্মদ কানদিল জানান, স্রোতের মতো রোগীরা আসছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড নেই। গত এক ঘণ্টায় ৬০ জন আহত ব্যক্তি এসেছেন। প্রতি মিনিটে একজন রোগী আসছেন। এ ছাড়া তেল দিয়ে জেনারেটরও বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার (১৪ অক্টোবর) এক ভিডিওবার্তায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এমন তথ্য জানিয়েছেন দেইর আল বালাহের আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের ফরেনসিক প্যাথলজিস্ট ইয়াসির খাতাব।
ইয়াসির খাতাব বলেছেন, হাসপাতালে এত পরিমাণ লাশ আসছে যে, এগুলো রাখার জায়গা হচ্ছে না। অনেক লাশ দিনের পর দিন হাসপাতালে পড়ে থাকে। এরপর এসে অন্যরা সেগুলো নিয়ে যায়। খাতাব আরও বলেন, গাজায় ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন। মর্গের রেফ্রিজারেটর, চিকিৎসা সরঞ্জামের পাশাপাশি কফিন ও মরদেহ দাফনের জন্য সরঞ্জামের প্রয়োজন।
প্রতিনিয়ত এমনই শত শত ভিডিও আর হাজারো মর্মস্পর্শী গল্প জন্ম নিচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার গাজায়।
ভিডিও-
মন্তব্য করুন