কয়েক দিন ধরেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল বুধবার (১৫ নভেম্বর) ইসরায়েলি সেনারা আকস্মিকভাবে ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এরপর এই হাসপাতাল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্যান্য অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেছে নেতানিয়াহু বাহিনী। যদিও ইসরায়েলের এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে হামাস।
আল-শিফা হাসপাতালে হামাস যোদ্ধাদের গোপন সুড়ঙ্গ রয়েছে, এমন দাবি করে বেশ কয়েক দিন ধরে হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলের সেনারা। আর এখান থেকে রোগী ও সাধারণ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে হামাস যোদ্ধারা। যদিও হামাসের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের এ দাবিকে নাকচ করে দেওয়া হয়।
কয়েক দিন ঘেরাও করে রাখার পর বুধবার আকস্মিকভাবে ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে পড়ে ইসরায়েলি সেনারা। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ভেতরে ঢুকেই তারা সবখানে হামাস যোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। বিশেষ করে গোপন সুড়ঙ্গ আছে কি না তার অনুসন্ধান করতে থাকে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে কোনো গোপন সুড়ঙ্গ বা হামাসের কোনো যোদ্ধার সন্ধান পায়নি ইসরায়েলি সেনারা। হামাসের হাতে আটক কোনো জিম্মিকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি আল-শিফা হাসপাতালে। উদ্দেশ্য ব্যর্থ হওয়ায় হাসপাতালের ভেতরে ব্যাপক তাণ্ডব চালাতে থাকে ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালের বিশেষায়িত সার্জারি বিভাগের ভেতর ইসরায়েলি কমান্ডোরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা সব দেয়াল ও পার্টিশন ভেঙে ফেলে। আরও বেশ কিছু কক্ষ গুঁড়িয়ে দেয়। হাসপাতালের বেসমেন্ট থেকে এক এক করে অনেক মানুষকে বাইরে বের করে এনে জেরা করা হয়। তাদের অনেককে চোখ বেঁধে বিবস্ত্র করে জেরা করা হয় বলে জানা গেছে।
এসব কর্মকাণ্ডের একপর্যায়ে হাসপাতাল এলাকা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করে ইসরায়েলি সেনারা। নিজেদের এমন দাবির পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও শেয়ার করেছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাদের এমন দাবির জবাবে হামাস কর্মকর্তা বাসেম নাইম আলজাজিরাকে বলেছেন, আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনারা এমন কোনো নাটকের অবতারণা করবে তারা আগেই ধারণা করেছিলেন। ইসরায়েলের এমন দাবিকে প্রহসন বলে অভিহিত করেন তিনি। ইসরায়েলিরা এসব অস্ত্র নিজেরা এনে হাসপাতালে রেখেছে, এমন সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলেও যোগ করেন তিনি।
নাইম বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে প্রমাণ পেশ করেছে তা হাস্যকর ও মূল্যহীন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল যা দাবি করে আসছে তা প্রমাণ করতে আবারও তারা ব্যর্থ হয়েছে।
মন্তব্য করুন