গাজায় নির্বিচার বোমাবর্ষণ এবং অসহায় নারী ও শিশুদের হত্যার জন্য ক্রমেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে মুসলিম বিশ্বসহ অন্যান্য অনেক দেশ। শুধু তাই নয় ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকা ও দেশটিকে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিখ্যাত অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধে বয়কট ঘোষণা করে ফিলিস্তিনপন্থিরা। তেমনি একটি কফিশপ চেইনের কাপ নিয়ে খবর উপস্থাপন করায় এবার বরখাস্ত করা হয়েছে তুরস্কের এক সংবাদ উপস্থাপিকাকে।
সম্প্রতি মার্কিন কফিশপ চেইন স্টারবাকসের কাপ নিয়ে সংবাদ উপস্থান করেন বিভিন্ন পুরস্কারজয়ী ৪৫ বছর বয়সী সংবাদ উপস্থাপিকা মেলতেম গুনায়। গেল ২৪ ডিসেম্বর তুর্কি সম্প্রচারমাধ্যম টিজিআরটি হাবেরে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের পরপরই মেলতেমসহ ওই অনুষ্ঠানের পরিচালককে চাকরিচ্যুত করা হয়। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়।
এক বিবৃতিতে টিজিআরটি নিউজ জানায়, প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসারে কোনো উপস্থাপক এমনভাবে সংবাদ উপস্থাপন করতে পারবেন না যা পরোক্ষভাবে কোনো কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচার করবে। স্টারবাকসের কফি কাপ নিয়ে সংবাদ উপস্থাপন করায় এ নীতিমালা ভঙ্গ হয়েছে, ফলে ওই উপস্থাপিকা ও পরিচালককে ন্যায়সঙ্গত কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তুর্কি টেলিভিশন স্টেশনটি জানায়, তারা গাজা সম্পর্কে তুর্কি জনগণের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এ অনুভূতিকে সম্মান করে। ফলে গাজাসংক্রান্ত অনুভূতির বিরুদ্ধে কোনো কাজ বা আচরণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব। এমনকি টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত উপস্থাপিকা ও অনুষ্ঠানের পরিচালকের এমন পদক্ষেপকে সমর্থন করে না। ফলে তাদের সঙ্গে চাকরির চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এ সময় টিজিআরটি হাবের শেষ পর্যন্ত গাজা এবং তুর্কি জনগণের পাশে দাঁড়াতে থাকবে এবং তাদের সংবেদনশীলতা রক্ষা করবে বলেও জানায়।
ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো তুরস্কেও কফি পানকারীরা স্টারবাকস বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতি সমর্থন জানানোর পর এ বয়কটের ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনপন্থিরা। এমনকি অক্টোবরে স্টারবাকস শ্রমিক ইউনিয়নের একটি অংশ ফিলিস্তিনের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে কফিশপ চেইনটি।
স্টারবাকসের এমন ইসরায়েলপন্থি আচরণের প্রতিক্রিয়ায় ডাকা বয়কটের ঘোষণায় ১৬ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ১ হাজার ১০০ কোটি ইউএস ডলার সমপরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। যা কফিশপ চেইনটির আয়ে সবচেয়ে বড় পতনের দৃশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন