কোনো ক্ষেত্রে বড় কিছু করতে হলে দরকার ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস আর ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার ক্ষমতা। এমনই এক অভূতপূর্ব উদাহরণ গড়েছেন জুলিয়া স্টুয়ার্ট। একসময় তাকে জানানো হয়েছিল, তিনি যে কোম্পানিতে চাকরি করেন কখনোই তার সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) হতে পারবেন না। কিন্তু সেই অপমানই হয়ে উঠেছিল তার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।
সিইও পদে সুযোগ না পেয়ে স্টুয়ার্ট তার কর্মক্ষেত্র অ্যাপলবিস কোম্পানি ছেড়ে যোগ দেন প্রতিদ্বন্দ্বী রেস্তোরাঁ চেইন ‘আইহপ’-এ। পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি আইহপকে লাভজনক ও নামকরা ব্র্যান্ডে পরিণত করেন। পরে সেই সাফল্যের জোরেই তিনি প্রস্তাব দেন তার সাবেক কর্মক্ষেত্র অ্যাপলবিস কিনে নেওয়ার। অবশেষে ২০০৭ সালে আইহপ ২.৩ বিলিয়ন ডলারে অ্যাপলবিসকে কিনে নেয়।
এক সাক্ষাৎকারে জুলিয়া স্টুয়ার্ট জানান, ’৯০-এর দশকের শেষ দিকে অ্যাপলবিসে কর্মরত অবস্থায় তাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তিনি কোম্পানিকে লাভজনক করতে পারলে সিইও পদ পাবেন। সে অনুযায়ী তিনি নতুন টিম গড়ে কোম্পানিকে মাত্র তিন বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড় করান। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখার পরিবর্তে শীর্ষ কর্মকর্তারা তাকে জানিয়ে দেন—‘তাকে সিইও পদ দেওয়া হবে না’।
স্টুয়ার্ট বলেন, “আমি ভেবেছিলাম হয়তো আজ নয়, কাল সুযোগ দেবেন। কিন্তু যখন তিনি বললেন ‘কখনোই না’, তখনই বুঝলাম আমাকে নতুন পথ খুঁজতে হবে।”
অ্যাপলবিস ছেড়ে দেওয়ার পর স্টুয়ার্ট আইহপে যোগ দেন এবং সফলভাবে সেটিকে নতুন রূপ দেন। এরপর সুযোগ বুঝে সাবেক কর্মক্ষেত্র কিনে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর তিনি অ্যাপলবিসের তৎকালীন সিইও ও চেয়ারম্যানকে ফোন করে বলেন, ‘আপনি অথবা আমি, কোম্পনিতে যে কোনো একজন সিইও থাকতে পারবে। তাই আপনাকেই বিদায় নিতে হবে।’
এই অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে স্টুয়ার্ট শুধু নিজের স্বপ্নই পূরণ করেননি, বরং প্রমাণ করেছেন—অবিশ্বাস ও অপমানকেও শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়।
পরে তিনি দীর্ঘ এক দশক ধরে ডাইন ব্র্যান্ডস ‘গ্লোবাল’-এর চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বোয়াজ্যাঙ্গলসের বোর্ড সদস্য এবং একটি ওয়েলনেস অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা।
সূত্র : এনডিটিভি
মন্তব্য করুন