বিশ্বের ধনীদের তালিকায় এক নতুন ইতিহাস গড়লেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। টেসলা, স্পেসএক্সসহ একাধিক উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের জোরে তার সম্পদ ছুঁয়েছে নজিরবিহীন ৫০০ বিলিয়ন ডলার। এই মাইলফলক অর্জনকারী তিনি বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি।
বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস জানিয়েছে, বুধবার (২ অক্টোবর) ফোর্বস বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী দিনের একপর্যায়ে মাস্কের মোট সম্পদ ৫০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় বিকেল ৫টায় তার সম্পদ দাঁড়ায় ৪৯৯ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। গত বছরই প্রথমবার তার সম্পদ ৪০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল।
টেসলার শেয়ারে ভর করে সম্পদ বৃদ্ধি
মাস্কের মোট সম্পদের প্রধান অংশ এসেছে টেসলার শেয়ার থেকে। বর্তমানে তিনি কোম্পানির প্রায় ১২ শতাংশ শেয়ারের মালিক। এ বছর টেসলার শেয়ারমূল্য প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়েছে। যদিও বছরের শুরুটা ছিল ওঠানামায় ভরা, কিন্তু সম্প্রতি মাস্ক প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের টেসলা শেয়ার কেনেন। বিশ্লেষকদের মতে, এটি তার কোম্পানির ভবিষ্যৎ রূপান্তরে আস্থার প্রতীক।
টেসলা এখন কেবল বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও রোবোটিকস খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে।
এক ট্রিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা
সম্প্রতি টেসলার বোর্ড মাস্ককে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নির্বাহী বেতন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবে এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পূরণ হলে মাস্কের সম্পদ এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ঘোষণার পর থেকে টেসলার শেয়ারমূল্য প্রায় ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে গেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই পরিকল্পনা মাস্ককে কোম্পানির প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে উৎসাহিত করবে।
অটোমোবাইল থেকে মহাকাশ ও এআই
মাস্কের ব্যবসায়িক যাত্রা এখন অনেক খাতেই বিস্তৃত। বৈদ্যুতিক গাড়ি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মহাকাশ গবেষণা, স্যাটেলাইট যোগাযোগ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা— সব ক্ষেত্রেই তিনি প্রভাব বিস্তার করছেন।
তার এআই কোম্পানি xAI এখন “কলোসাস” নামের একটি বিশাল সুপার কম্পিউটার তৈরি করছে, যা বড় ভাষা মডেল প্রশিক্ষণে ব্যবহার হবে। প্রতিষ্ঠানটির চ্যাটবট ‘গ্রোক’ সরাসরি প্রতিযোগিতা করছে ওপেন এআইয়ের চ্যাটজিপিটি ও গুগলের জেমিনির সঙ্গে।
অন্যদিকে, স্পেসএক্স বর্তমানে বাণিজ্যিক মহাকাশ খাতে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করছে। তাদের স্টারলিংক স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক বিশ্বের সবচেয়ে বড়। কোম্পানিটি নিয়মিতভাবে সর্বাধিক রকেট উৎক্ষেপণ করছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সরবরাহ পাঠাচ্ছে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের স্যাটেলাইট বহন করছে।
মন্তব্য করুন