আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে ‘অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে’ ধ্বংস হয়ে যাওয়া টাইটান সাবমেরিনের কয়েকটি টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর বুধবার টাইটানের ধ্বংসাবশেষের ছবি উদ্ধার করা হলো। বুধবার সকালে কানাডার সেন্ট জনস থেকে দেশটির পতাকাবাহী একটি জাহাজ থেকে এসব ধ্বংসাবশেষ ক্রেনের সাহায্যে ট্রাকে তুলতে দেখা গেছে। টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গত ১৮ জুন পাঁচ আরোহী নিয়ে আটলান্টিকে ডুব দেয় সাবমার্সিবল টাইটান। পরে সমুদ্রের তলদেশে ‘অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে’ নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়। মারা যায় সেটিতে থাকা পাঁচ আরোহীর সবাই। বিস্ফোরণ হওয়া ডুবোযান টাইটানের কয়েকটি টুকরো রোবটের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, টাইটান সাবমেরিনের কয়েকটি টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে, এর মধ্যে স্বতন্ত্র বৃত্তাকার জানালাসহ নাকের অংশ রয়েছে। এগুলো আমেরিকান জাহাজ সাইকামোর এবং হরাইজন আর্কটিক থেকে সেন্ট জোন্সের নিউফাউন্ডল্যান্ডের একটি বন্দরে আনলোড করা হয়েছিল দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়। ১৯১২ সালে নিজের প্রথম সমুদ্র যাত্রাতেই ডুবে যায় ওই সময়ের সর্ববৃহৎ জাহাজ টাইটানিক। বিখ্যাত সেই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গত ১৮ জুন ডুব দেয় ওশানগেইটের ডুবোযান টাইটান। ডুব দেওয়ার প্রায় ৯০ মিনিট পর পানির উপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজের সঙ্গে সেটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। টাইটান সাবমার্সিবলে আরোহী হিসেবে ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের, বিমান সংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানের অ্যাংরো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে (৭৭) এবং ওশানগেইটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ (৬১)। টাইটান হারিয়ে যাওয়ার পর সেটির অনুসন্ধানে সমুদ্রের তলদেশে প্রায় আড়াই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সেটির অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হয়। পরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছেই টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় সাগরের তলদেশে পাঠানো একটি রিমোট অপারেটিং ভেহিকলও (আরওভি)। ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের ফলে টাইটানের ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছিল তা স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ধ্বংসাবশেষগুলো কোথায় নেওয়া হচ্ছিল তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন