শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিচে একটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রের মেঝেতে অনেকটা এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এ গর্তটিকে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ বা মাধ্যাকর্ষণজাত গর্ত বলা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই গর্তটি বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সমুদ্রের নিচে বিশাল অংশজুড়ে এই গর্তের কারণে অনেকের ধারণা, সমুদ্রের তলদেশ হয়তো নিচের দিকে বসে যাচ্ছে। এই গর্ত থেকে আগামী দিনে পৃথিবীর উপরিভাগের কোনো ক্ষতি হতে পারে কি না, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে এই গর্তের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে।
ভারত মহাসাগরের নিচে এ বিশাল গর্ত কীভাবে তৈরি হলো, এর সম্ভাব্য কারণ বের করেছেন দুই ভারতীয় বিজ্ঞানী। তারা হলেন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের গবেষক দেবাঞ্জন পাল ও আত্রেয়ী ঘোষ। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস’ নামের একটি জার্নালে তাদের গবেষণামূলক তত্ত্বটি প্রকাশিত হয়েছে।
তারা বলছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল মহাকর্ষ বলের টানে সমুদ্রতলের কোনো অংশ নিচের দিকে বসে গেলে ‘গ্র্যাভিটি হোল’-এর সৃষ্টি হয়। ভারত মহাসাগরের নিচেও তা হয়েছে।
ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রস্থলে দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ টানের কারণ হিসেবে ভূত্বকের নিচে পৃথিবীর ম্যান্টেল স্তরের গলিত ম্যাগমাকে দায়ী করা হচ্ছে। এই ম্যাগমাই দুই কোটি বছর আগে পৃথিবীর আকৃতি গড়ে দিয়েছিল।
ভূত্বকের নিচ দিয়ে দুই কোটি বছর ধরে বয়ে চলেছে এই তরল তপ্ত ম্যাগমা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ম্যাগমার স্রোত যদি কখনো থমকে যায়, ভারত মহাসাগরের তলদেশে তৈরি হওয়া গর্তটিও মিলিয়ে যাবে।
বাইরে থেকে দেখে এ গর্তের উপস্থিতি বোঝা সম্ভব না হলেও এই ‘গ্র্যাভিটি হোল’ নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা চলছে। আগামী দিনে এ বিষয়ে আরও নতুন তথ্য, নতুন ভাবনা উঠে আসতে পারে।
মন্তব্য করুন