ইউক্রেনের কিয়েভে ব্রিটিশ বন্ধ থাকা একটি ভিসা সেন্টারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার (১০ জুন) এ হামলা চালানো হয়। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর কিয়েভে এটিই মস্কোর সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন। রাশিয়া একসঙ্গে ৩১৫টি ড্রোন ও ৭টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে এ হামলা চালায়।
স্থানীয়দের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় রাত ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ড্রোনের শব্দ শোনা যায়। এরপর শুরু হয় ভারী গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরণ।
হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে সিগমা বিজনেস সেন্টার নামে একটি ভবনও ছিল। ভবনটি গত বছর পর্যন্ত কিয়েভস্থ যুক্তরাজ্যের ভিসা সেন্টার হিসেবে ব্যবহার হতো। হামলায় কাঁচের দেয়ালযুক্ত বহুতল ভবনটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে এবং নিমিষেই চারপাশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
এ ছাড়া এই হামলায় একাদশ শতকের ঐতিহাসিক সেন্ট সোফিয়া ক্যাথেড্রালের একটি কার্নিস সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভের বাইরে, দক্ষিণ ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দর ওদেসা শহরের একটি মাতৃসদন হাসপাতাল ও আবাসিক ভবনেও হামলা হয়েছে। এতে দুজন নিহত এবং আরও ৯ জন আহত হন।
এদিকে, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবেই সিগমা বিজনেস সেন্টার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি মস্কোয় নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন অভিযোগ করেছিলেন, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে ‘অত্যাধুনিক প্রযুক্তি’ দিয়েছে। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ইউক্রেন ‘স্পাইডার্স ওয়েব’ নামের অভিযান চালায়। ওই অভিযানে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়। ভবনটির এক নিরাপত্তাকর্মী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, হামলার সময় সেখানে তিনজন ছিলেন, তবে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু নীরবতা নয়, বরং রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাস্তব ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমেরিকার ক্ষমতা আছে রাশিয়াকে শান্তির পথে বাধ্য করার। এখন শক্ত চাপ প্রয়োজন।’
গত মাসে পশ্চিমা দেশগুলো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুমকি দিয়েছিল, যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। তবে এখনো এর বাস্তবায়নের তেমন লক্ষণ দেখা যায়নি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন। তিনি বারবার পুতিনকে ‘আরও দুই সপ্তাহ’ সময় দিচ্ছেন শান্তির পথে আসার জন্য।
মন্তব্য করুন