

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ নিয়ে এবার প্রকাশ্য বিভক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ ও আমেরিকা। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেন। আলোচনা করেন ভ্ললোদিমির জেলেনস্কি ও পুতিনের সঙ্গে। পাশাপাশি ইউরোপ নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন ট্রাম্প। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে কোটি কোটি টাকার সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমারা।
এ অবস্থায় গত নভেম্বরে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ২৮ দফা প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। কিন্তু এই প্রস্তাবের পরই ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপ নেতাদের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। কারণ এই প্রস্তাবকে একপেশে বলে দাবি করছে ইউরোপীয় নেতারা এবং এতে রাশিয়ার চাওয়া-পাওয়াকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় ইউক্রেন নিয়ে করণীয় নির্ধারণে সোমবার লন্ডনে বৈঠকে বসেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারামার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস। যাতে অংশ নেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্ললোদিমির জেলেনস্কি। ওই বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা মার্কিন প্রচেষ্টায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করাকে একটি জটিল মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি তারা রাশিয়ার ওপর আরও বেশি অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানায়।
এদিকে গত সপ্তাহে, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাব মেনে নিতে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফ্লোরিডায় বৈঠক করে মার্কিন প্রতিনিধিদল। তবে কিয়েভ এই প্রস্তাবকে রাশিয়ার জন্য বিশেষ সুবিধা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে মঙ্গলবারের বৈঠকের সময় জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন প্রস্তাব থেকে ইউক্রেন বিরোধী ধারাগুলো বাদ দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে—ইউক্রেনকে পূর্বাঞ্চল থেকে পুরোপুরিভাবে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে এবং এ অঞ্চল রশিয়াকে ছেড়ে দিতে হবে। এর বিনিময়ে রাশিয়া অন্য অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিবে যুদ্ধ শেষ করবে। তবে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়াকে পূর্বাঞ্চল ছেড়ে দিলে ভবিষ্যতে কিয়েভে হামলার আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।
এ অবস্থায় ইউরোপীয় নেতারা মার্কিন মধ্যস্থতায় এমন একটি যুদ্ধবিরতির প্রত্যাশা করছেন যেখানে ভবিষ্যতে রাশিয়ার হামলা থেকে ইউক্রেন আশঙ্কামুক্ত থাকবে। তবে ট্রাম্প এ ধরনের কোনো নিশ্চয়তা দেননি। এ অবস্থায় ইউক্রেনে নিয়ে ইউরোপ ও আমিরেকার মধ্যে বিভক্তি চললেও ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
মন্তব্য করুন