ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে সরাসরি জড়ানোর ঘোষণা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুদ্ধ শুরুর পর নড়েচড়ে বসেছে দেশটি। ইরানের পাল্টা হামলার পর দেশটির বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে একের পর এক উড়ছে যুদ্ধবিমান। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে রণতরী পাঠিয়েছে দেশটি। সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে সব আয়োজন করছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (১৬ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত তীব্র হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে বিপুল সংখ্যক জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান পাঠিয়েছে। মার্কিন দুই কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য সামরিক বিকল্প প্রদানের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন বিমানবাহী রণতরী নিমিটজ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটিতে ৫,০০০ জন কর্মী এবং ৬০টির বেশি বিমান মোতায়েনের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে যুদ্ধবিমানও রয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ সোমবার রাতে এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা সক্ষমতা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষা আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার এবং এই মোতায়েনগুলো এই অঞ্চলে আমাদের প্রতিরক্ষা ভঙ্গিমা শক্তিশালী করার জন্য।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট এয়ারন্যাভ সিস্টেমস জানিয়েছে, রোববার ৩১টির বেশি মার্কিন বিমানবাহিনীর জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান, প্রধানত কেসি-১৩৫ এবং কেসি-৪৬, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পূর্ব দিকে রওনা হয়েছে। এই বিমানগুলো জার্মানির রামস্টাইন বিমান ঘাঁটি, যুক্তরাজ্য, এস্তোনিয়া এবং গ্রিসের বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা বিমানের সংখ্যা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। পেন্টাগন রয়টার্সকে হোয়াইট হাউসের সাথে যোগাযোগের কথা জানিয়েছে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি হোয়াইট হাউস।
ডায়ামি সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের এরিক শাউটেন বলেন, ২৪টির বেশি মার্কিন বিমান বাহিনীর ট্যাঙ্কারের হঠাৎ পূর্বমুখী মোতায়েন স্বাভাবিক নয়। এটি কৌশলগত প্রস্তুতির স্পষ্ট সংকেত।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইসরায়েলকে আগত মিসাইল ধ্বংসে সহায়তা করছে। রোববার দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছেন। একজন কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু করার পক্ষে নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত আমেরিকানরা লক্ষ্যবস্তু না হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০ হাজার সেনা, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ফাইটার বিমান এবং যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এসবের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে সহায়তা করতে পারে। গত মাসে পেন্টাগন ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি ঘাঁটিতে বিমান প্রতিস্থাপন করে বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে। এটি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে।
মন্তব্য করুন