ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নৃশংসতা ও ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফিলিস্তিন মুক্তির স্লোগানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকারীদের হটাতে জোর প্রয়োগ করছে পুলিশ, নির্বিচারে চলছে গ্রেপ্তার।
এরই মধ্যে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবন দখল করে সেখানে অবস্থান নেয় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। তবে পরবর্তিতে অভিযান চালিয়ে ভবনটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পুলিশ। এ সময় কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে আজ বুধবার, (১ মে) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে (ইউসিএলএ) ফিলিস্তিনপন্থি ও ইসরায়েলপন্থি প্রতিবাদকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একটি মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যমের লাইভ কভারেজে সংঘর্ষের চিত্র দেখা গেছে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব পত্রিকা ডেইলি ব্রুইন বলেছে, ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রতিবাদকারীদের ক্যাম্প ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন ইসরায়েলের সমর্থকরা। এসময় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবশে করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিনে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ। সেখান থেকেও বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভকারীদের তাঁবু সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা নির্দেশ মানেননি।
টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, উতাহ, ভার্জিনিয়া, নিউ মেক্সিকো, নিউ জার্সি, কানেক্টিকাট ও লুজিয়ানার ক্যাম্পাসগুলো থেকে পুলিশ অন্তত এক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে এবং তারা বিক্ষোভকে বাধাহীনভাবে চলতে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এই হামলায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ১ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের এই নির্বিচার হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। যুদ্ধ শুরু পর থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির এবং ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে একের পর এক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করে আসছেন তারা। ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিবাদে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
এবারের বিক্ষোভ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলেছে, যা ২০২০ সালের বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভের পর মার্কিন শিক্ষার্থীদের অংশ নেওয়া সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের ঘটনা।
মন্তব্য করুন