ডলারের দাম বাড়লেও আগামী কোরবানি ঈদের আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
সম্প্রতি দেশে প্রতি মার্কিন ডলারের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ করা হয়েছে। এতে সংগত কারণেই আমদানিকারকের পণ্য আমদানিজনিত ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানালেন, ডলারপ্রতি দাম ৭ টাকা বাড়ানো হলেও আগামী কোরবানির ঈদের আগে ভোজ্যতেলের দাম নতুন করে আর সমন্বয় করা হবে না। আগামী জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে কোরবানির ঈদ হওয়ার কথা। অর্থাৎ এর আগে তেলের দাম বাড়ছে না।
গতকাল মঙ্গলবার সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ভোজ্যতেল আমদানিনির্ভর পণ্য। ভোক্তাদের সুবিধার্থে ডলারের দাম বাড়ার পরও এর দাম সমন্বয় করা হবে না। উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকরা আগামী ঈদ পর্যন্ত নতুন করে কোনো দাম বেঁধে দেবেন না। তারা আগের দামেই ভোজ্যতেল সরবরাহ করতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই, ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়লেও ভোক্তা পর্যায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘আমদানিকারকরা অভিযোগ করে আসছিলেন, ব্যাংক থেকে তারা সরকারি দরে ডলার পাচ্ছিলেন না। তখন কেউ ১২০ টাকা, কেউ ১২২ টাকা অর্থাৎ একেকজন একেক হারে এলসি নিষ্পত্তি করছিলেন। এখন তারা সরকারি দরেই আমদানি করতে পারবেন।’
তেলের দাম নিয়ে দুঃসংবাদ কি তাহলে আগামী ঈদের পরেই আসছে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোথায় যুদ্ধ হবে, অর্থনীতির কোথায় কী হবে, তা আগাম ধারণা করা যাবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করা হবে।
মন্ত্রিসভার গত সোমবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজার তদারকি নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। এর অর্থ কি এই যে এ ব্যাপারে অবহেলা আছে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত রমজানের আগে ও পরে বাজার স্থিতিশীল রাখতে তৎপর ছিলাম। সামনে কোরবানির ঈদ। ঈদ এলে আমাদের দেশের কিছু লোক আছে, যারা সুযোগসন্ধানী, সরবরাহ ঠিক থাকার পরও জিনিসপত্রের দাম দু-এক জায়গায় বাড়িয়ে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘গত রোজার ঈদের সময় যেভাবে তদারকি করেছি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে আবারও সেভাবেই তদারকি করতে বলেছেন। ঈদে যাতে ভোক্তারা কোনো অসুবিধায় না পড়েন, ন্যায্যমূল্যে জিনিসপত্র পান, সে জন্য দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এটা আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হয়েছে, কাজ গতি পাবে। আমাদের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন।’
এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার: সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক থেকে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য উত্থাপিত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এ সয়াবিন তেল কেনা হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, টিসিবির জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে। এর প্রতি লিটারের দাম ১৫২.৪৫ টাকা। এর পূর্বমূল্য ছিল ১৫২.৯৮ টাকা। এই তেল কিনতে খরচ হবে ১৮২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সুপার অয়েল রিফাইনারি হচ্ছে এর সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান।