বিশ্ববেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৩ এএম
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কেনেডি হত্যার রহস্য কি এবার উন্মোচন হবে

হাজারো নথির সন্ধান পাওয়ার দাবি এফবিআইর
কেনেডি হত্যার রহস্য কি এবার উন্মোচন হবে

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি গুপ্তহত্যার ঘটনা আজও বিশ্ব ইতিহাসে রহস্যাবৃত হয়ে আছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ ঘিরে সেই রহস্য ধীরে ধীরে উন্মোচন হতে যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাজারো নথিপত্রের সন্ধান পেয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ মানতে গিয়ে তারা এসব নথির অনুসন্ধান শুরু করে। গত মঙ্গলবার এফবিআই জানায়, অনুসন্ধানে প্রায় ২ হাজার ৪০০টি নতুন তালিকাভুক্ত ও ডিজিটালাইজড নথি পাওয়া গেছে।

এর আগে জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এসব নথির সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হতো না। এফবিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা নতুন করে পাওয়া নথিগুলোর বিষয়ে যথাযথ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। পাশাপাশি গোপন নথিকে প্রকাশ্যে আনার চলমান প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে এগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পাঠানোর কাজ করছে। গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জন এফ কেনেডি, তার ছোট ভাই রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকারের প্রতীক মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে হত্যার অসামান্য রেকর্ডসহ জন এফ কেনেডি হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত অবশিষ্ট সব ফাইল প্রকাশ এবং জনসমক্ষে আনার নির্দেশ দেন। এরপরই এফবিআই নথি খুঁজে পাওয়ার ঘোষণা দিল।

ট্রাম্প সেই সময় বলেছিলেন, এটি একটি বড় ঘটনা। অনেক মানুষ বছরের পর বছর, দশকের পর দশক ধরে এর জন্য অপেক্ষা করছে। সবকিছু প্রকাশ করা হবে। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে টেক্সাসের ডালাসে হত্যা করা হয়। দশকের পর দশক ধরে তার হত্যাকাণ্ড ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জরিপে এই হত্যাকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে ব্যাপক সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের গ্যালাপ জরিপে ৬৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিক বলেছিলেন, লি হার্ভে অসওয়াল্ড একাই জন এফ কেনেডিকে হত্যা করেছিলেন বলে ওয়ারেন কমিশন যে ফয়সালা দিয়েছিল, তা তারা বিশ্বাস করেন না। ট্রাম্পের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত প্রার্থী এবং রবার্ট এফ কেনেডির ছেলে রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ২০২৩ সালে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, তার চাচার হত্যাকাণ্ডে সিআইএ জড়িত থাকার ব্যাপারে ‘অকাট্য’ এবং ‘অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ রয়েছে।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে এ হত্যাকাণ্ডের অবশিষ্ট সব রেকর্ড প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পর্যালোচনার অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার ফাইল আটকে রাখার জন্য সিআইএ এবং এফবিআইর চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন। পরে অবশ্য তিনি প্রায় ২ হাজার ৮০০টি নথি প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন প্রায় ১৭ হাজার নথি প্রকাশ করেছে। সে সময় ৪ হাজার ৭০০টির কম নথি আংশিক কিংবা সম্পূর্ণরূপে আটকে রাখা হয়েছিল। ন্যাশনাল আর্কাইভের মতে, জেএফকে রেকর্ডস আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ জন এফ কেনেডিকে হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার নথির ৯৯ শতাংশের বেশি প্রকাশ করেছে।

যেভাবে কেনেডিকে হত্যা করা হয়: ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর যখন প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে হত্যা করা হয়, তখন তিনি একটি ছাদখোলা লিমুজিনে চড়ে ডালাসের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই রাস্তার ওপর নজর রাখা যায়—এমন একটি ভবনের জানালা দিয়ে লি হার্ভে অসওয়াল্ড গুলি করে তাকে হত্যা করেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারেন কমিশনের রিপোর্টে দাবি করা হয়। তবে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছিল। ওয়ারেন কমিশন অবশ্য বলেছিল লি হার্ভে অসওয়াল্ড বা তাকে হত্যাকারী জ্যাক রুবি আসলে কোনো বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল না। কিন্তু তারপরও কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে জল্পনাকল্পনা থামেনি।

হত্যাকারী লি অসওয়াল্ড আসলে কে: লি অসওয়াল্ড কেন প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে হত্যা করতে গেলেন, তা নিয়েও চালু আছে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। সাবেক মার্কিন মেরিন সেনা লি হার্ভে অসওয়াল্ড মার্কসবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। ১৯৫৯ সালে তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে যান। সেখানে থাকেন ১৯৬২ সাল পর্যন্ত। তিনি মেক্সিকো সিটিতে কিউবান এবং রুশ দূতাবাসে গিয়েছিলেন। কেউ কেউ তাই মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে সোভিয়েত বা কিউবান ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।

কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব: বহুল প্রচলিত একটি তত্ত্ব হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর ডানপন্থিদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রেসিডেন্ট কেনেডি নিহত হয়েছেন এবং এর সঙ্গে সিআইএ যুক্ত। অবশ্য ১৯৭৫ সালে রকফেলার কমিশন জানায়, এই হত্যাকাণ্ডে সিআইএর জড়িত থাকার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই। আরেকটি তত্ত্ব হচ্ছে, একজন নয়, দুজন বন্দুকধারী প্রেসিডেন্ট কেনেডির ওপর গুলি চালায়। লি অসওয়াল্ড আসল হত্যাকারী কি না, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। বিশেষ করে যে ভবন থেকে তিনি গুলি করেছেন বলে বলা হয়, সেখান থেকে গুলি করে প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে হত্যা করা সম্ভব ছিল কি না, সে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া সেই নাহিদকে পদ দিল এনসিপি

যারা মাইনাস ফোরের কথা বলছেন তারা স্বৈরাচারের দোসর : প্রেস সচিব

সহজ সমীকরণ মিললেই বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা!

এক জেলার ২৪৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষককে শোকজ

আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫-এ অংশ নিচ্ছে দেশি-বিদেশি ১৩০ প্রতিষ্ঠান

জবিতে সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা ‎ ‎

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ৩১০ বাংলাদেশি

দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ

এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধীদের তালা

খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা

১০

কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদে তারেক রহমানের সহায়তা 

১১

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া পটুয়াখালীর ৪ শিক্ষককে বরগুনায় বদলি

১২

ভূমিকম্প থেকে আত্মরক্ষার দোয়া ও করণীয় আমল

১৩

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়া নিয়ে স্পষ্ট বার্তা মির্জা ফখরুলের

১৪

ধানমন্ডিতে বাবার বাসা মাহবুব ভবনে গেলেন জুবাইদা রহমান

১৫

ব্রাজিলের ক্লাবের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ, খেলা দেখবেন যেভাবে

১৬

জবির প্রতিষ্ঠাতা বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া

১৭

ববি ছাত্রদলের তিনটি পদে নির্বাচন শনিবার, লড়বেন ১০ প্রার্থী

১৮

মৃত্যুর ফেরেশতা কি প্রাণীদেরও রুহ কবজ করেন? জানুন

১৯

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে আমাদের শপথ : সালাউদ্দিন আহমদ

২০
X