ভারী বৃষ্টি, সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ভারত ও নেপালে প্রায় ৭০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে ভূমিধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রধান সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে হিমালয়ের রাজ্য সিকিমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দার্জিলিংয়ের গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ), টাইগার হিল, রক গার্ডেনসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে, নেপালে বন্যা আর ভূমিধসে কমপক্ষে ৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে এবং ভেসে গেছে কিছু সেতু। খবর এনডিটিভি ও আলজাজিরার।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে ভারী বৃষ্টিতে দার্জিলিংয়ের মিরিক ও সুখিয়া পোখরি এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া দার্জিলিংয়ে যাতায়াতের প্রধান সড়কে ধস নামায় কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারী বৃষ্টিতে মিরিক ও দুধিয়ায় লোহার সেতু ভেঙে শিলিগুড়ি থেকে মিরিকের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এদিকে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে তিস্তা বাজারে সড়ক তলিয়ে যায়। এ ছাড়া রোহিণী রোডের একাংশ ধসে নদীতে পড়ে যাওয়ায় দুর্গাপূজার ছুটিতে ওই এলাকায় ভ্রমণরত পর্যটকরা আটকা পড়েছেন। এলাকাগুলোতে পুলিশ ও প্রশাসন এবং উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতালেও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। মিরিকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্শিয়াং জানান, মিরিকে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করতে কাজ চলছে।
এদিকে, নেপালে গত ৩৬ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে ভয়াবহ ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে, ভেসে গেছে বহু সেতু এবং কমপক্ষে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানী কাঠমান্ডুর আর্মড পুলিশ ফোর্স সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে কোসি প্রদেশে ৩৬ জন ও মধেশে ৩ জন নিহত হয়েছেন। দেশজুড়ে এখনো ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন।
মারা যাওয়া ৪৭ জনের মধ্যে ইলামে ভূমিধসের ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, পাঁচজন এখনো নিখোঁজ। উদয়পুরে বন্যা ও ভূমিধসে দুজনের মৃত্যু এবং একজন আহত হয়েছেন। খোতাংয়ে বজ্রপাতে একজন মারা গেছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। ভোজপুরে বজ্রপাতে আরও দুজন আহত হয়েছেন। পঞ্চথরে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। মধেশের রানীরহাটে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যত্র, বরায় একজন, রাসুয়ায় চারজন এবং কাঠমান্ডুতে নদীতে ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মাকোয়ানপুরে বজ্রপাতে একজন আহত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন