সাইবার অপরাধী চক্র মানুষের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেছে। এখন তারা ওটিপি বা এটিএম পিন ছাড়াই ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শুধু একটি প্রতারণামূলক বার্তার মাধ্যমিই চক্রটি ভুক্তভোগীর অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রতারকরা এমন বার্তা পাঠাচ্ছে, যা দেখতে একেবারেই ব্যাংকের অফিসিয়াল মেসেজের মতো। বার্তায় থাকে একটি লিংক, যা ক্লিক করলেই ভুক্তভোগীর মোবাইল থেকে সরাসরি ব্যাংক তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যায়। এরপর সহজেই তারা ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরিয়ে ফেলে, তাও কোনো ওটিপি ছাড়াই।
এই প্রতারক চক্র ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে বিভিন্ন অনলাইন উৎস থেকে, যেখানে মানুষ নিজের মোবাইল নম্বর, ইমেইল বা ক্রয়ের তথ্য শেয়ার করেছে। তারপর সেই তথ্য ব্যবহার করে পাঠানো হচ্ছে ‘পুরস্কার জেতার’ বা ‘অফার পাওয়ার মেসেজ।
সম্প্রতি নয়াদিল্লির ২৬ বছর বয়সী এক নারী এমন প্রতারণার মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি দোকান থেকে একটি এইচপি ল্যাপটপ কেনেন। এরপর একটি মেসেজ পান, যেখানে বলা হয়েছিল তিনি একটি ভাউচার জিতেছেন। মেসেজে তার ব্যাংকের ও ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়। তবে মেসেজে ওই দোকানের নামের পরিবর্তে ‘ক্রোমা’ ও ‘বিজয় সেলসের’ নাম থাকায় তার সন্দেহ হয়। পরে তিনি ওই ভুয়া লিংকে ক্লিক না করে নিরাপদ থাকেন।
কল মার্জিং করে সাইবার হামলা
প্রতারকরা এখন কল মার্জিং, ভয়েস মেইল হ্যাক, কিউআর কোড জালিয়াতি এবং স্ক্রিন শেয়ারিং প্রতারণার মতো উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার করছে। কল মার্জিং প্রতারণায় কোনো ব্যক্তি যেমন সাংবাদিক বা পেশাজীবীকে ফোন করে বলা হয় তিনি যেন একটি ইভেন্ট কাভার করেন। ঠিক সেই সময় আরেকটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে, যেটি নাকি কোনো ‘ভিআইপি নম্বর’।
প্রতারক ব্যক্তি ভুক্তভোগীকে বলে, দুই কল মার্জ করতে। কল মার্জের পর প্রতারক সহজেই শুনতে পারে ব্যাংক বা অ্যাপের মাধ্যমে আসা ওটিপি, যার মাধ্যমে তারা টাকা চুরি করে বা অ্যাকাউন্ট দখলে নেয়।
যেভাবে সুরক্ষিত থাকবেন
অচেনা নম্বর থেকে আসা কল বা মেসেজে সতর্ক থাকুন।
ব্যক্তিগত বা ব্যাংক তথ্য কখনোই অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
কোনো অজানা লিংক বা অফার বার্তায় ক্লিক করবেন না।
অবিশ্বস্ত সূত্র থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না, কারণ এতে হ্যাকাররা আপনার মোবাইলের ক্যামেরা বা গ্যালারিতে প্রবেশাধিকার পেতে পারে।
সন্দেহজনক কল পেলে আগে অফিসিয়াল নম্বরে যোগাযোগ করে যাচাই করুন।
ডিজিটাল যুগে নিজের তথ্য কোথাও দেওয়ার আগে সচেতন থাকুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যক্তিগত বিষয় জানানো থেকে বিরত থাকা ভালো। কারণ হ্যাকার বিভিন্ন উৎস থেকেই তথ্য নিয়ে থাকে।
মন্তব্য করুন