মুজাহিদুল ইসলাম
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:২৮ এএম
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ইসরায়েল হামাস যুদ্ধের পরে কী হবে?

নিহত হয়েছে ৫০১ ইসরায়েলি সৈন্য
ছবি : সৌজন্য
ছবি : সৌজন্য

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ২১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। অন্যদিকে নিহত হয়েছে ৫০১ ইসরায়েলি সৈন্য। জাতিসংঘের হিসাব মতে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উপত্যকার ৪০ শতাংশ মানুষ।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাব, ফলে সংকট আগে থেকেই ছিল। গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানের পর একটি প্রশ্ন আবারও সামনে আসছে, তা হলো—এই সংকটের শেষ কোথায়? ঠিক এমনই প্রশ্ন উঠেছিল ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের পর।

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল তার স্থল অভিযান শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন দি আটলান্টিকের নিবন্ধকার ফ্রাঙ্কলিন ফোয়ার তার নিবন্ধের শিরোনামে প্রশ্ন রেখেছিলেন ‘আমাকে বলুন এই যুদ্ধের শেষ কোথায়?’ ফ্রাঙ্কলিনের সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ নয়। তবে আমরা যেটি দেখছি তা হলো প্রতিদিন নিরপরাধ বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে...

কীভাবে এই সংকটের শেষ হয়?—ফ্রাঙ্কলিনের সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে এই নিবন্ধে। আগামীতে কী করা হতে পারে বা কী করা উচিত, সে বিষয়ে কিছু দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হলো এই নিবন্ধে—

ইসরায়েল গাজার দখল রাখলে কী হবে?:

ইসরায়েলের প্রধান লক্ষ্য গাজা উপত্যকা থেকে হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা। কিন্তু এই লক্ষ্য পূরণ হওয়া অসম্ভব। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ হুসেইন ইবিশ বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলিরা যদি গাজায় থেকে যায় তবে তা হবে হামাসের জন্য একটি বড় রাজনৈতিক বিজয়। এবং এই রাজনৈতিক বিজয় প্রকৃতপক্ষে হামাসের জন্য মূল্যবান। যদি এমনটিই ঘটে, তবে এই যুদ্ধ কয়েক মাস বা বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকবে।’

দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান?:

ইসরায়েলি বা ফিলিস্তিনিরা কেউই তাদের জাতীয় পরিচয় ত্যাগ করবে না। কেউই তাদের জন্মস্থান ও তাদের ভূমি ছেড়ে অন্য কোথাও যাবে না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আরাশ আজিজি তার নিবন্ধে লিখেছেন, ‘যারা সত্যিই পবিত্র ভূমিতে শান্তি ও ন্যায়বিচার চান তাদের এই বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে শুরু করা উচিত।’

কার্যকর কূটনৈতিক কৌশল গ্রহণ?:

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সাহসী কূটনীতি অনুশীলন করেছেন জো বাইডেন। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতেও সেটি কাজ করতে পারে। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল কার্টজার লিখেছেন, ‘শান্তির সম্ভাবনার অগ্রগতি, ইসরায়েলি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ফিলিস্তিনিদের অভিযোগের সমাধান করা জরুরি। সেই লক্ষ্যে কূটনীতি অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে।’

নেতানিয়াহুর পরের যুগ:

ইসরায়েল শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং টিকে আছে। কিন্তু এর পেছনে তাদের নেতাদের থেকে বেশি অবদান ইসরায়েলের জনগণের।

দি আটলান্টিকের লেখক ইয়ার রোজেনবার্গ লিখেছেন, ‘ইসরায়েলের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী ও তার কট্টর ডানপন্থি মিত্ররা ব্যর্থ হয়েছেন। রাষ্ট্রের শক্তির আসল উৎস জনগণ। নেতানিয়াহু একসময় বিদায় নেবেন এবং ইসরায়েল কট্টরপন্থি অবস্থান থেকে হয়ত সরে আসবে।’

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের নাগরিকরা শান্তি চায়:

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সংকট এবং সংঘাতের কারণে প্রাণ হারিয়েছে অনেক মানুষ। স্বাভাবিক জীবন থেকে বঞ্চিত হয়েছে হাজার হাজার ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি। সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহতা সত্ত্বেও-বা সম্ভবত এই সংঘাতের কারণেই অনেক ইহুদি এবং ফিলিস্তিনি আগের চেয়ে বেশি শান্তি চাইছে। ব্রিটিশ ফিলিস্তিনি লেখক জন আজিজ লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের শান্তি দরকার। তার থেকেও বেশি দরকার সঠিক নেতৃত্ব। মুসলিম ও অমুসলিম সম্প্রদায়গুলোর প্রতিও যাদের দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে। যারা কাউকে নিপীড়ন করার পরিবর্তে সবার স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে।’

শান্তির বার্তা:

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংকটের সামরিক সমাধান কখনো হয়নি, হবেও না। ফিলিস্তিনে আমেরিকান টাস্ক ফোর্সের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াদ আসালি লিখেছেন, ‘হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে গাজাকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে ইসরায়েল। এটি করার জন্য তাদের কাছে বড়বড় অস্ত্র এবং বোমা রয়েছে। তবে এটি ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করতে পারবে না।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাতৃত্বের স্বাদ পেলেন ইয়ামি

ইরানের নতুন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বললেন পুতিন

থাইল্যান্ডে বুদ্ধ পূর্ণিমা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করলেন বিপ্লব বড়ুয়া

আবুল মনসুর আহমদ-অধ্যাপক মযহারুল ইসলামের স্মরণে একক বক্তৃতা

শোরুম ম্যানেজার নেবে যমুনা গ্রুপ, পদ ৩০

ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্র-বৃষ্টির শঙ্কা

বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

মৌসুম শেষে প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো কত টাকা করে পাচ্ছে?

নারায়ণগঞ্জে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪

গোরস্থান, মাদ্রাসার দান বাক্স ভেঙে চুরি

১০

‘শরীফ থেকে শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়ার সুপারিশে এইচআরএফবি’র প্রতিবাদ

১১

পলাশ ও এন্ড্রু কিশোরের ফিরিয়ে দেওয়া গান গেয়েই আসিফের বাজিমাত

১২

রাইসির মৃত্যুতে শি’র মাতম

১৩

কর অঞ্চল-১৭, ঢাকায় ১০১ জনের বড় নিয়োগ

১৪

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মাউশির ৯ নির্দেশনা

১৫

রাইসির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের শোক

১৬

গভর্নর, ডেপুটি গভর্নরদের সব প্রোগ্রাম বর্জন / প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

১৭

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল দুই মোটরসাইকেল আরোহীর

১৮

সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্ত্রী, হাসপাতালে পুলিশ কর্মকর্তা

১৯

ইরানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ঘোষণা

২০
X