ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওডিশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৩ জনের প্রাণহানির এক মাস পরও ৫০টির বেশি মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। আর এসব মরদেহ তখন থেকেই ওডিশার হাসপাতালে পড়ে আছে। খবর বিবিসির।
গত ২ জুন ওডিশায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন রেললাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। এতে পার্শ্ববর্তী ট্র্যাকে ছিটকে যায় ট্রেন দুটি। উল্টে যাওয়া কয়েকটি কোচ অন্য একটি ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ভারতের গত ১০০ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এ দুর্ঘটনায় আহত হন আরও ১ হাজারের বেশি মানুষ। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেন ও রেললাইন মেরামতের পর আবারও সচল হয় ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তবে অনেক পরিবার বলেছে, তারা এখনো তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ খুঁজছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা শিবচরণ গত এক মাস ওডিশার ভুবনেশ্বর শহরের একটি গেস্ট হাউসে কাটিয়েছেন। ওডিশার সরকারি হাসপাতাল এইমসে রাখা হয়েছে মরদেহগুলো। এইমসের কাছে অবস্থিত ওই গেস্ট হাউস। মোট ৫২ জনের মরদেহ রয়েছে এবং সেগুলো একটি ডিপ-ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কিছু মৃতদেহের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। শিবচরণ তার ভাই কৃষ্ণের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার আশায় হাসপাতালটিতে প্রায়ই যান। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই তার ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছিলেন বলে জানান শিবচরণ।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মরদেহ শনাক্ত করার কাজ কঠিন হয়ে পড়বে। তবে পরিচয়হীন মরদেহ কতদিন রাখা যাবে এবং দাবিদার না থাকলে কী করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ বিকল্প হিসেবে গণ সৎকারের পরামর্শ দিয়েছেন। তবে বিশ্বজিৎ সাহু বলেছেন, ডিএনএ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে না। গত ২ জুন সন্ধ্যায় বালাসোর জেলার বাহাঙ্গা স্টেশনের কাছে ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। দুটি ট্রেনে ৩ হাজারেরও বেশি যাত্রী ভ্রমণ করছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দুটি ট্রেনই যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। ভারতের শীর্ষ তদন্ত সংস্থাকে এ দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন