টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল সংকটে সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ৬৫ জন চিকিৎসক প্রয়োজন। সেখানে আছেন ৬১ জন। ১৬৫ জন নার্সের মধ্যে আছেন ৩৯ জন। তাদের মধ্যে চারজন প্রশিক্ষণে, দুজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ও দুজন ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন। ৩৭৭ জন আউটসোর্সিং জনবলের মধ্যে ৯০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আয়া, সুইপার ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওয়ার্ডে রোগীদের পাশেই রাখা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। দুর্গন্ধে শৌচাগারে প্রবেশ করা মুশকিল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের পাশে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ তলা ভবনের কাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। ২০১৮ সালের শেষের দিকে কাজ শেষ হয়। ২০২২ সালের ২২ মার্চে হাসপাতাল ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয় গণপূর্ত বিভাগ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের অন্তঃবিভাগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মেডিসিন বিভাগ চালু করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ২১ জুন থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে মেডিসিন, শিশু, গাইনি, সার্জারি, চক্ষু, ডেন্টাল, বক্ষব্যাধি, নিউরোলজি, ইউরোলজি, মানসিক, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, ফিজিকাল মেডিসিন, চর্ম ও যৌন, কার্ডিওলজি, নেফরোলজি, অর্থপেডিক, অনকোলজি (ক্যান্সার), আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, সিটিস্ক্যান, এক্স-রেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে শিশু, ডায়রিয়া, কার্ডিওলজি, অবস, চক্ষু, নাক-কান-গলা, গাইনি, পোস্ট অপারেটিভ, আইসিইউ, সিসিইউ, সার্জারি, অনক্লোনজি ও অর্থপেডিক ওয়ার্ড, ১০টি আইসিইউ বেড, সিসিইউ এবং ১৫টি অপারেশন থিয়েটারের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে হাসপাতাল ভবনসহ ২৭টি ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৮৪ কোটি টাকা। ১০৮ কোটি টাকার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। বাকি ১০৮ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লিটন ও মাসুদ জানান, হাসপাতালটি পুরোপুরি চিকিৎসা না দিতে পারায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন টাঙ্গাইলবাসী। যার ফলে ঢাকা ও ময়মনসিংহের দিকে রোগী নিতে হয় । এতে রোগীদের ব্যয় ভার বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। দুর্ভোগ তো আছেই। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুরোপুরি মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার দাবি জানাই।
শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি চালু করতে পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন। এ মুহূর্তে নার্স সংকটই আমাদের বড় সমস্যা। জনবলের জন্য বারবার চিঠি দেওয়া
হয়েছে। জনবল পেলেই পুরোপুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতি সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে সব যন্ত্রপাতিই আছে। কিন্তু জনবলের কারণে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন