আবারও বাড়তে শুরু করেছে ডিমের দাম। গতকাল রোববার ঢাকায় প্রতি ডজন ফার্মের (বাদামি) ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫৫ থেকে ১৬২ টাকায়। প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি করপোরেট পর্যায় থেকে সরবরাহ ঘাটতি থাকায় বাজারে ডিমের দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহে এই সময়ে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছিল ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকায়। গত দুদিনে হঠাৎ ডিমের দামের পরিবর্তনে সাধারণ মানুষের অসন্তুষ্টি বেড়েছে।
এর আগে গত বছরের আগস্ট মাসে ডিমের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। পরে বাজার তদারকি এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পর্যায়ক্রমে কমে আসে পণ্যটির দাম। তবে সেই সময় ডিমের দাম ও বাজার তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একটি কমিটি গঠন করা হলেও তার কোনো কার্যক্রম এখন পর্যন্ত বাস্তবে রূপ পায়নি।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজারে প্রতি পিস ফার্মের ডিমের দাম ছিল ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১ টাকার মধ্যে, যা শুক্রবার ১২ টাকা পৌঁছায়। গত শনিবার ১২ টাকা ২০ পয়সা এবং গতকাল রোববার বিক্রি হয়েছে ১২ টাকা ৪০ পয়সায়। প্রতি শ হিসাবে ১ হাজার ২৪০ টাকা। গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ১৩ টাকা থেকে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা বা তারও বেশি দামে।
অন্যদিকে মফস্বল এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকা থেকে ১২ টাকা ৬০ পয়সায়। প্রতি শ হিসাবে ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ২৬০ টাকা। খুচরা দোকানে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা থেকে ১৪ টাকা ৫০ পয়সায়, হালি হিসাবে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায়।
বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, রোজার আগে ব্রয়লার মুরগির বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। তখন করপোরেট পর্যায় থেকে বলেছে, মুরগির দাম কমানো সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা প্রান্তিক খামারিরা বলেছি, যৌক্তিকভাবে পোলট্রি মুরগির দাম কমানো সম্ভব। প্রয়োজনে সরকার ও অংশীজনের সমন্বয়ে দাম ঠিক করে দেওয়া হোক। সেটি না করে খামারিরা যখন লাভের আশায় বাচ্চা কিনলেন, তখন তারা দাম কমাতে শুরু করে। গত তিন মাস অদৃশ্য কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম কম। বড় কোম্পানি যদিও বলে তাদের বাজারে অংশগ্রহণ কম। কিন্তু আমরা প্রান্তিক খামারিরা ৮০ ভাগ হয়েও তাদের সঙ্গে টিকতে পারছি না। এর অন্যতম কারণ, বাজারে ন্যায্যতা না থাকা। এখন প্রান্তিক খামারিরা লোকসানে আছেন, অনেকে বর্ষার কারণে খামার বন্ধ করেছেন। আর এ সুযোগে করপোরেটরা দাম বাড়াচ্ছে। আবার যখন খামারিরা ডিমের মুরগি তুলবে তখন তারা দাম কমিয়ে দেবে।
মন্তব্য করুন