বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের আমলে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির রাজ্যসভার প্রভাবশালী নেতা পীযূষ গয়াল। তিনি বলেন, ভারত রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল বাংলাদেশ চায়। স্থিতিশীলতার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
সফররত আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদল গতকাল মঙ্গলবার নয়াদিল্লির সংসদ কার্যালয়ে পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী এ অঞ্চলে অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির স্বার্থে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। ‘বিজেপিকে জানুন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লি সফর করছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে রয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আরমা দত্ত এমপি ও অধ্যাপক মেরিনা জাহান এমপি।
নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে তারা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও উন্নয়নমূলক বিষয়ে আলোচনা করেন।
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে ভারতের এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক বজায় রাখতে ভারত সবসময়ই আন্তরিক। বাংলাদেশের যে কোনো সমস্যা ভারত সবসময় বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে থাকে। আগামী দিনে এ অংশীদারত্ব অব্যাহত ও শক্তিশালী করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানিয়েছে, খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে বলেন, তার সরকার দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বৃহত্তর সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর ওপর সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে। যাতে বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রয়োজনের সময় প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর একটি অনুমানযোগ্য প্রবাহ পেতে পারে। এ ছাড়া ভারত সরকারও বাংলাদেশ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানিতেও অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ সময় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে ভারত যেন বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করতে পারে—সেজন্য তিনি প্রতিনিধিদলের সদস্যদের আরও পণ্যের নাম প্রস্তাব করার অনুরোধ জানান।
বৈঠক শেষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাসসকে বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ব্যবসা-বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইস্যু ওঠে এসেছে।
এদিকে প্রতিনিধিদলটি গতকাল বিকেলে জি-২০ সমন্বয়ক ও ভারতের প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে দেখা করেছে। বৈঠকে ঢাকায় ভারতের সাবেক এই হাইকমিশনার বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ নীতি হচ্ছে প্রতিবেশী প্রথম। আর সব প্রতিবেশীর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। এই বিশেষ সম্পর্কের কারণেই বাংলাদেশকে জি-২০ সম্মেলনে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শ্রিংলা আরও বলেন, জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয় এমন কোনো শক্তিকে ভারত কখনো সমর্থন করে না।
এর আগে সকালে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলটি নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া গেট সার্কেলে ভারতের জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য করুন