ঘূর্ণিঝড় হামুনের মূল অংশ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। এর তাণ্ডবে কক্সবাজারে দেয়াল ও গাছ চাপা পড়ে তিনজনের মৃত্যুর খবর এসেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। লন্ডভন্ড হয়েছে কক্সবাজার শহর। অনেক কাঁচা ও আধাকাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে অনেক গাছ। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল রাত ৮টা থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে পুরো কক্সবাজার শহর ও আশপাশের এলাকা। ঘূর্ণিঝড় হামুন গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ শুরু হয়। উপকূলের অনেক জায়গায় স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়। এ অবস্থায় সমুদ্রবন্দরে পণ্য ওঠানামা ও সব ধরনের নৌ-চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। হামুন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে উপকূলবাসী। দুর্বল বেড়িবাঁধ ভাঙার আতঙ্কে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করে। ছুটি বাতিল করা হয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
ঝোড়ো হাওয়া আর বাতাসের তীব্র আঘাতে কক্সবাজার শহর ও উপকূল এলাকায় গাছপালা উপড়ে এবং কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। মাঝরাতেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান মঙ্গলবার রাত ১২টায় বলেন, দুজনের মধ্যে পৌর এলাকায় একজনের মৃত্যু হয়েছে দেয়াল চাপায়। আর মহেশখালী উপজেলায় গাছচাপায় একজনের মৃত্যুর খবর এসেছে।
কক্সবাজার পৌরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দেয়াল ধসে যার মৃত্যু হয়েছে, তার নাম আবদুল খালেক, বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। স্থানীয় কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার বলেন, রাত ১০টার দিকে দেয়াল ধসে পড়েছিল। তাতে খালেক মারা যান। মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মুন্সির ডেইল গ্রামে মারা গেছেন হারাধন নামের এক ব্যক্তি। তিনি গাছ চাপা পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান। চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে আসকর আলী নামের আরেকজন গাছচাপায় মারা গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এলেও বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি জেলা প্রশাসক।
রাত ৯টার পর কক্সবাজার সদর উপকূলে ঝোড়ো বাতাসের তীব্রতা কমতে শুরু করে। অন্যদিকে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ঝোড়ো হাওয়া ক্রমেই বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর থেকে বাতাসের গতি ছিল অনেক বেশি। সে সময় অনেক ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। বড় বড় অনেক গাছও দুমড়েমুচড়ে পড়ে। উড়ে যায় দোকানপাটও। কক্সবাজার শহরের মতো মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ভেঙেছে গাছগাছালি। এতে অনেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ঝড়ের বড় প্রভাব পড়েনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে আগামী ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম শেষ করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর ‘খুবই উত্তাল’ থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ চলছে। ভারি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ভোলার ওপর দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমের কথা ছিল ঘূর্ণিঝড় হামুনের। তবে গতিপথ পাল্টে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার ওপর দিয়ে আগামী ১০ ঘণ্টার মধ্যে অতিক্রম করবে।
তিনি বলেন, হামুন গতিপথ পাল্টেছে। ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে এটি উপকূল অতিক্রম করবে। বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ ৭০-৮০ কিলোমিটার। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে সাগর উত্তাল রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, কুতুবদিয়া দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের একটি অংশ অতিক্রম করেছে। এখন মূল অংশ উপকূল অতিক্রম করবে। এটি অতিক্রম করতে আরও ৮-১০ ঘণ্টা সময় লাগবে। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০৪ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ ঘুরে যাওয়ায় কয়েক জেলার মানুষকে আর আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৯ জেলার ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৭ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। এর মধ্যে বরিশালে ৪ হাজার ৪০৩, ভোলায় ২৫ হাজার ৭৫৫, চট্টগ্রামে ৩৭ হাজার ১৯৭, কক্সবাজারে ৪০ হাজার ১৬১, ফেনীতে ২০৪, বাগেরহাটে ৪২৬, নোয়াখালীতে ২ হাজার ৭৫৩, পটুয়াখালীতে ২ হাজার ৩৫০ এবং পিরোজপুরে ১ হাজার ৩১৮ জন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। এ ছাড়া ৫ হাজার ৯৭৯টি গরু-মহিষ, ৩ হাজার ৩৭৫টি ছাগল, ভেড়াসহ ৯ হাজার ৪৪৮টি গবাদি পশু আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
এদিকে হামুনের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাসহ অদূরবর্তী দ্বীপচর এলাকাগুলোয় নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
নামের ক্রম অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘হামুন’। জানা যায়, ‘হামুন’ শব্দটি ইরানি। যার অর্থ ‘সমতল ভূমি’ বা ‘পৃথিবী’। হামুনের পর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তার নাম হবে ‘মিধিলি’। নামটি দিয়েছে মালদ্বীপ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ১০ জেলার ১৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। মাঠপ্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। প্রতি জেলায় ২০ লাখ টাকা ও ৫০ টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে নৌ চলাচল বন্ধ: ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশে নৌপথে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিটিএ। গতকাল বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার কথা জানান।
রাজধানীর সদরঘাট থেকেও বন্ধ ছিল সব ধরনের নৌযান চলাচল। ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকা নদীবন্দরে এক নম্বর ও চাঁদপুরের পরে ২ নম্বর সতর্কতাসংকেত রয়েছে। উপকূলে রয়েছে ৭ নম্বর পর্যন্ত। চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনা বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় আগাম সতর্কতা হিসেবে সদরঘাট থেকে সব গন্তব্যে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রস্তুত ফায়ার সার্ভিস: দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জনসাধারণকে সচেতন ও সতর্ক করছে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলো। কেন্দ্রীয়ভাবে সদর দপ্তরে খোলা হয় মনিটরিং সেল। জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বরে বা কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন ১৬১৬৩ নম্বরে ফোন করার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের মোবাইল নম্বর ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯-এ ফোন করেও জরুরি সেবা পাওয়া যাবে।
পাহাড়ের বাসিন্দাদের নেওয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ে: ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। তাই পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরাতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১০০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক।
উপকূলীয় এলাকার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৯০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলা সন্দ্বীপ, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড নগরীসহ ৮০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
কক্সবাজারে ৫৭৬ আশ্রয়কেন্দ্র: প্রবল ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রমের সময় কক্সবাজার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফ উপকূল এবং প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনসহ আশপাশের উপকূলীয় এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, জেলার ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। জেলার নয় উপজেলার জন্য টাকা, ১৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধও।
দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক প্রস্তুতি: ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের জানমালের ক্ষতি এড়াতে বরিশাল জেলার ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়। সেইসঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয় ৬১ মেডিকেল টিম। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বরিশাল বিভাগে মোট ১ হাজার ৮৪৫টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা।
পটুয়াখালী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১০২টি, দুমকীতে ২৭টি, মির্জাগঞ্জে ৪৩টি, বাউফলে ১৪০টি, দশমিনায় ৬৩টি, গলাচিপায় ১১৮টি, কলাপাড়ায় ১৫৬টি এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় ৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে।
বাগেরহাটে ৪৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র: ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বাগেরহাটে ৪৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, এসব কেন্দ্রে ২ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টের ২ হাজারের বেশি সদস্য তৎপর রয়েছেন। শুকনো খাবারের পাশাপাশি ৯ লাখ টাকা ও ৬৫০ মেট্রিক টন চাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ২৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখের বেশি মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৬৪টি মেডিকেল টিম, ৩ হাজার ২৮০ জন সিপিপি সদস্য ও সাড়ে ৪০০ রেড ক্রিসেন্ট সদস্য রয়েছেন। পিরোজপুরে ৪০৭ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাতটি উপজেলায় আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের কাছে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, টিন, ৪১২ মেট্রিক টন চাল ও ৪ হাজার কম্বল রয়েছে। ৬৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছেন ১ হাজার ৭০০ সিপিপি সদস্য ও সাড়ে ৩০০ স্কাউট সদস্য।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রাম ও বরিশাল ব্যুরো, কক্সবাজার, টেকনাফ, কলাপাড়া, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, সীতাকুণ্ড, ঝালকাঠি, লক্ষ্মীপুর, পিরোজপুর ও বাগেরহাট প্রতিনিধি)