শুল্ক নীতি নিয়ে আবারও উত্তেজনা তৈরি করতে প্রস্তুত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ৭ জুলাই একই সঙ্গে ১২টি দেশের কাছে পারস্পরিক শুল্কহার আরোপের চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তিনি। এতে ওই দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর রয়টার্সের
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ওই সব চিঠি আগামী সোমবার (৭ জুলাই) পাঠানো হবে। তবে এই তালিকায় বাংলাদেশ আছে কি না তা জানা যায়নি।
এর আগে এপ্রিল থেকে ৯০ দিনের শুল্কবিরতির পর ট্রাম্প প্রশাসন পুনরায় একতরফা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেসব বড় অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখনো সমাধানে পৌঁছায়নি, তারাও এবার শুল্ক বৃদ্ধির মুখোমুখি হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ভারত, জাপানসহ বিশ্ববাজারের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো এই তালিকায় রয়েছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, বর্তমানে ১০ শতাংশ বেস শুল্ক বজায় রাখা হবে। তবে ১ আগস্ট থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক হার বৃদ্ধি করা হতে পারে। শুল্ক আরোপের চূড়ান্ত সময়সীমা ৯ জুলাই নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই তারিখের মধ্যে কোনো দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা হলে শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্থগিত থাকবে।
কোন দেশগুলো ঝুঁকিতে?
যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আংশিক সমঝোতায় পৌঁছেছে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে ভিত্তি শুল্ক ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হবে। ভিয়েতনামকে দেওয়া হয়েছে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ছাড়ের সুযোগ এবং মার্কিন পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, জাপান, ব্রাজিল, মেক্সিকো, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা এখন শুল্ক বৃদ্ধির ঝুঁকির মুখে।
ট্রাম্প প্রশাসন চিঠির মাধ্যমে এই দেশগুলোর সামনে ‘গ্রহণ অথবা প্রত্যাখ্যান’-এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিকল্প রেখেছে। ট্রাম্প নিজে একবার বলেছেন, ‘চিঠি পাঠানো ভালো, আলোচনা নয়।’
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, স্বল্পমেয়াদে ৭০ শতাংশ শুল্ক আরোপ বিশ্ববাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দীর্ঘমেয়াদে ট্রাম্পের নীতিতে বহুপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিবর্তে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অস্থিরতা ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক বৃদ্ধির প্রবণতা জোরদার করবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতিতে ১২টি দেশের ওপর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ৭ জুলাই শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন পাঠানোর মাধ্যমে এই নতুন ধাপ শুরু হবে। দুই দেশের সঙ্গে আংশিক সমঝোতা সত্ত্বেও বাকিদের জন্য কড়া শুল্ক হার আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন