দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে ২৭৫ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। বাতিল হয়েছে আগে বৈধ ঘোষিত পাঁচ প্রার্থীর মনোনয়ন। ফলে আপাতত জাতীয় নির্বাচনে ২ হাজার ২৬০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকছেন। গতকাল
শুক্রবার পর্যন্ত মোট আপিলের মধ্যে ২৮৫ প্রার্থীর আবেদন নামঞ্জুর করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তারা চাইলে হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন। আগামীকাল রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা নির্ধারিত হবে।
এদিকে ইসিতে করা ৫৬০টি আপিল শুনানিতে ২৮৫টি মঞ্জুর ও ২৭৫টি নামঞ্জুর হয়। আপিলে বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদ, ফরিদপুর-৩ আসনে শামীম হক, যশোর-৪ আসনে এনামুল হক বাবুল, ময়মনসিংহ-৯ আসনে আব্দুস সালাম, কক্সবাজার-১ আসনে সালাহউদ্দীন আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। আর মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন নোয়াখালী-৩ আসনে মামুনুর রশিদ কিরণ ও কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নাসিরুল ইসলাম খান।
এ ছাড়া আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে নোয়াখালী-৪ ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আব্দুল্লাহর আপিল নামঞ্জুর করে মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আর ফরিদপুর-৩ আসনে বৈধ স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. আজাদ, ঝালকাঠি-১ আসনে আলোচিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহজাহান ওমর, পটুয়াখালী-১ আসনে জাতীয় পার্টির এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বরিশাল-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ, নোয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের একরামুল করিম চৌধুরীর মনোনয়ন বৈধই রাখে কমিশন।
আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরও রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরী, সিলেট-২ আসনে গণফোরামের মোকাব্বির খান, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা) অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান, নেত্রকোনা-৫ আসনে স্বতন্ত্র অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, পাবনা-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী, রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার ওরফে মাহিয়া মাহী ও বগুড়া-৪ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের হিরো আলম। যদিও হিরো আলম এরই মধ্যে তার ফেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র জমা হয়। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা ৭৩১ জনের বাতিল ও ১ হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে ৫৬০টি আপিল আবেদন জমা পড়ে। গত রোববার থেকে শুরু হয়ে গতকাল শেষ হয় এসব আপিল শুনানি।
ইসি ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় আগামীকাল। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি রোববার।