রাজধানীতে মুরগির সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার গুলিস্তান-সংলগ্ন কাপ্তান বাজার। বছরজুড়েই এখানে রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলে জমজমাট বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে নানা জাতের মুরগি নিয়ে এই বাজারে আসেন খামারি ও পাইকাররা। আর সুলভ মূল্যে জ্যান্ত মুরগি সংগ্রহ করতে এখানে ভিড় জমান ঢাকার প্রায় সব এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন এখানে লেনদেন হয় ৭ থেকে ১০ কোটি টাকা। তবে দেশের মুরগি ব্যবসার এ প্রাণকেন্দ্রে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি। তাকে চাঁদা না দিয়ে কাপ্তান বাজারে কোনো ট্রাক ঢুকতে পারে না। স্থায়ী বা অস্থায়ী সব রকম দোকান থেকেও চাঁদা আদায় করে তার লোকেরা। শুধু নির্বিচার এই চাঁদাবাজির কারণেই ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি মুরগিতে অতিরিক্ত দাম গুনতে হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা। আর কেউ টাকা দিতে অস্বীকার করলে জোটে মারধর। বন্ধ করে দেওয়া হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করে সিটি করপোরেশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়মমাফিক বাজার পরিচালনার দাবিতে সোচ্চার হওয়ায় এরই মধ্যে কমপক্ষে ২০ ব্যবসায়ী বেকায়দায় পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুরগির বাজারের এই একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী গৌরব। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তার বাবা আবু আহমেদ মন্নাফী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
শুধু মুরগি বেচাকেনাই নয়, পুরো কাপ্তান বাজার ও এর আশপাশের এলাকাজুড়েই তার একক নিয়ন্ত্রণ। চাঁদা তুলতে রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ জনের বিশাল বাহিনী। কাউন্সিলরের এ ‘রামরাজত্বে’ সহায়তা করছে সরকারি কর্মকর্তা, এমনকি পুলিশ সদস্যরাও।
গত সোমবার রাতে সরেজমিন বাজার ঘুরে মুরগি ব্যবসায়ী ও ট্রাকচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাঁদা তোলা নিয়ে কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী গৌরব ও সিটি টোলের ইজারাদারের প্রতিনিধি নিয়াজ মোর্শেদ জুম্মনের লোকজনের বিরোধে দুই মাস বন্ধ ছিল বাজার। পরে মুরগির বাজার চলে যায় আনন্দবাজার নিমতলী প্রধান সড়কে। গত ২৭ নভেম্বর কাপ্তান বাজারে বাজার চালু হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক দুই থেকে তিন হাজার টাকা নেওয়া হয়। সোনালি মুরগি ব্যবসায়ীদের গুনতে হয় অতিরিক্ত এক হাজার টাকা। এ ছাড়া জামানত ডিসেম্বর মাসে নেওয়া হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক-পিকআপে মুরগি আসে কাপ্তান বাজারে। পুলিশের সামনে যে যার ইচ্ছামতো ট্রাক থামিয়ে চাঁদা তোলে। এর মধ্যে সিটি টোলের ইজারাদার প্রতিনিধি জুম্মনের লোকজন ট্রাক-পিকআপ ট্রিপপ্রতি ১৭০ টাকা আদায় করে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে মুরগি কিনে ভ্যানে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দোকানে নিয়ে যান। সে ভ্যানেও চলে চাঁদাবাজি। ব্যাটারিচালিত ৫০ টাকা ও প্যাডেলচালিত ভ্যানচালকদের দিতে হয় ৪০ টাকা। চাঁদা আদায় দেখেও না দেখার ভান করে পুলিশ।
এক মুরগি ব্যবসায়ী জানান, প্রতি রাতেই মুরগির বাজারে চাঁদাবাজি চলে। টাকার পরিমাণ নিয়ে চাঁদা আদায়কারীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও চালকদের প্রায়ই বাগবিতণ্ডা হয়। টাকা দিতে রাজি না হলে চালক-হেলপারকে মারধর করা হয়। যানবাহনে মরা মুরগি পাওয়া গেলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দিতে হয়।
জানা গেছে, কাপ্তান বাজারের এই বিশৃঙ্খলা দূর করতে ইজারাদার নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ইজারাদার নিয়োগ না করা পর্যন্ত মুরগির রাত্রিকালীন পাইকারি বাজার ও দোকান থেকে ‘খাস’ আদায়ে গত ১৮ ডিসেম্বর উপকমিটি গঠন করে দেয় ডিএসসিসি। ছয় সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘খাস আদায় পদ্ধতিতে রাজস্ব আহরণ করা হচ্ছে। বর্তমানে দৈনিক ১ লাখ ৮০০ টাকা রাজস্ব পাচ্ছে করপোরেশন।’
তবে মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত রাজস্বের বাইরেও নিয়মিত চাঁদা দিতে হয় তাদের। কাউন্সিলর গৌরব তাদের কাছ থেকে আগাম এক মাসের ভাড়া বাবদ দোকানপ্রতি ৬০ হাজার টাকা ও এককালীন জামানত বাবদ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া সোনালি মুরগির গাড়ি থেকে মাসিক ভিত্তিতে ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন তিনি। এরপরও দৈনিক নানা খাতে চাঁদাবাজি চলছে। ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে।
এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারটি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি। বারবার প্রশাসনের কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনে গিয়েছি কারও কাছে কোনো সমাধান পাচ্ছি না। প্রতি রাতে লাখ লাখ টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সব ধরনের চাঁদাবাজদের বিতাড়িত করে সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে ক্রেতা, ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন, সরকারও রাজস্ব পাবে। মেয়র-মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলব—একটু বাজার ঘুরে দেখেন কীভাবে বাজার লুটেপুটে নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, মুরগির বাজারে রাজস্ব আদায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে গত ২৪ ডিসেম্বর ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে লিখিত আবেদন করে কাপ্তান বাজার পোলট্রি মুরগি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি। এর পরই ওই সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২০ ব্যবসায়ীর দোকান বন্ধ করে দিয়েছে কাউন্সিলরের লোকজন।
কাপ্তান বাজার পোলট্রি মুরগি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি কাজী বোরহান কালবেলাকে বলেন, ‘কাউন্সিলর আহমেদ ও সিটি টোলের ইজারাদারের চাঁদাবাজি কেন্দ্র করে ১৭ সেপ্টেম্বর বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর বাজার চালু হয়। দ্বিতীয় দফায় ৩ অক্টোবর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত বাজার বন্ধ ছিল। বাজার থেকে রাজস্ব আদায়ে খাস কমিটি করা হলেও সেখানে কোনো ব্যবসায়ীকে রাখা হয়নি। খাস কমিটিতে কোনো রেট নির্ধারণ হয়নি। খাস নেওয়া হলে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেওয়া হবে। কিন্তু দোকানপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের ২০ ব্যবসায়ীকে তিনি বাজারে ঢুকতে দিচ্ছেন না। আমরা নিঃস্ব হওয়ার পথে।’
সমিতির পরিচালক হুমায়ুন কবীর বাবুল বলেন, ‘কাপ্তান বাজারে রাজত্ব কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী গৌরবের। তার অনুমতিতে বাজার চলবে, নইলে চলবে না। বাজারে ঢুকলেও টাকা দিতে হবে, বের হলেও টাকা দিতে হবে। নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা, চাঁদাবাজির কারণে এ বাজারে ব্যবসায়ীরা আসতে চাইছেন না। গত ২৭ নভেম্বর বাজার চালু হওয়ার পর আমাদের দোকান বসাতে দেওয়া হচ্ছে না। এক লাখ টাকা চেয়েছেন কাউন্সিলর। প্রতিদিন দোকান চালাতে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা, কর্মচারীদের বেতন দিয়ে পরিবার চালানো সম্ভব নয়। আমরা সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা চাই।’
ব্যবসা বন্ধ হয়ে পথে বসা আরেক ব্যবসায়ী জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু এখন আমি দোকান বসাতে পারছি না। বাজারে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা সবসময় বাকি থাকে। ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় সে টাকাও তুলতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করে আসছি। বাজারে মুরগির দাম বাড়ে না; কিন্তু দাম বাড়ায় এখানকার চাঁদাবাজরা। চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকজনের সঙ্গে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাউন্সিলরের হয়ে কাপ্তান বাজারে চাঁদার টাকা তোলায় নেতৃত্ব দেন তার আপন চাচাতো ভাই ইয়াছির ইলিয়াস রাসেল। নূরজাহান বেগম নামে এক নারীও তাকে দলবল নিয়ে চাঁদাবাজিতে সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া আব্দুর রহমান, শামীম শেখ, আমজাদ ও এস এম সম্রাটসহ কয়েকজন রাতদিন শিফট করে চাঁদা আদায় করেন।
কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শুধু মুরগির বাজার নয়—পুরো এলাকা ঘিরে গড়ে উঠা সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকেই চাঁদাবাজি করে কাউন্সিলরের লোকজন। কাপ্তান বাজার থেকে জুরাইন পর্যন্ত প্রতিদিন কয়েকশ লেগুনা চলাচল করে। প্রতিটি লেগুনা থেকে দিনে অন্তত ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে কাউন্সিলরের লোকজন। সিটি টোলের নামে আরও ৩০ টাকা তোলা হয়। প্রতি শুক্রবার সকালে কাপ্তান বাজারে বসে কবুতর ও পাখির হাট। দেশি-বিদেশি নানা জাতের কবুতর পাওয়া যায় হাটে। এ হাটে বসা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ব্যাপক চাঁদাবাজি করে কাউন্সিলরের লোকজন। মুখ খুলতে সাহস পান না ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কাপ্তান বাজার কাঁচাবাজারের (ঠাটারি বাজার) ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার পর বিপাকে পড়েন সবজি ও মাছ ব্যবসায়ীরা। বাজারের উন্মুক্ত স্থানে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার নামে দুই বছর ধরে কাউন্সিলর গৌরব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেন বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। টাকা তোলেন কাউন্সিলরের চাচাতো ভাই রাসেল। টাকা নেওয়ার সময় তিনি দোকানিদের বলেন, ব্যবসা করতে হলে টাকা দিতে হবে। নইলে দোকান বসানো যাবে না।
এক মাছ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাজারে বিভিন্ন সময় হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ব্যবসায়ীদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। অনেক মামলা এখনো চলছে। প্রতিবাদ করায় হাজি বাহাউদ্দীন নামে এক ব্যবসায়ীর নামে চারটি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এসব ঘটনার পর ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। আমরা মাছ বাজারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি।’
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কাপ্তান বাজারে এখন জোর যার মুল্লুক তার অবস্থা চলছে। কাউন্সিলরের ক্ষমতা ব্যবহার করে লুটপাট হচ্ছে। যখন ইচ্ছা ব্যবসায়ীদের দোকান উঠিয়ে দেয়, আবার টাকা দিলে বসতে হয়।’
তিনি জানান, গুলিস্তানের পরিবহন শ্রমিক নেতা রহমানের মাধ্যমে বাস ও ট্রাক শ্রমিকদের চাঁদাবাজিতে নিয়োগ করা হয়। পরিবহন শ্রমিকদের দিয়ে কাউন্সিলর এলাকাটি নষ্ট করে রেখেছে। এখানে ব্যবসায়ীদের কোনো সম্মান নেই।
জানা গেছে, কাপ্তান বাজার এলাকায় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাও দখল করে নিয়েছে কাউন্সিলরের লোকজন। গোডাউন বানিয়ে সেখান থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। দখলদারদের দাপটে পথ চলতে কষ্ট হয় পথচারীদের। প্রকাশ্যে চলে মাদক সেবন ও বেচাকেনা।
জানা গেছে, কাউন্সিলর গৌরবের লোকজন ছাড়াও সিটি টোলের নামে কাপ্তান বাজার থেকে চাঁদা আদায় করে আরেকটি গ্রুপ। ডিএসসিসির পরিবহন বিভাগ থেকে সেভেন এলাভেন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সিটি টোল আদায়ের ইজারা দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জুম্মনের লোকজন কাপ্তান বাজারে মুরগি নিয়ে আসা যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করে।
জানতে চাইলে জুম্মন বলেন, ‘এতদিন কাউন্সিলর মুরগির বাজার থেকে দিনে ৮ লাখ টাকার বেশি চাঁদা উঠাত। আমি ইজারার নিয়ম অনুসারে টাকা তুলতে গেলেই সমস্যা। কাউন্সিলর গৌরব আমার কাছে চাঁদার ৪০ শতাংশ দাবি করেছে। মুরগির বাজারে দোকানপ্রতি প্রতি রাতে আড়াই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়। কারও থেকে মাসে এক লাখ নেয়। যার কাছ থেকে যা নিতে পারে। মাসে অন্তত দুই কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে কাউন্সিলর। বাজার উন্মুক্ত করে দিক, চাঁদা কাউকে দিতে হবে না।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী কালবেলাকে বলেন, ‘কাপ্তান বাজারে মুরগির পাইকারি বাজারে পক্ষ-বিপক্ষ আছে। তাদের মধ্যে একাধিকবার ঝামেলা হয়েছে। কে বা কারা চাঁদাবাজি করে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য কিংবা অভিযোগ পাইনি। পুলিশের নামে টাকা উঠানো হয় কি না—জানি না। তবে কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যোগাযোগ করা হলে ডিএসসিসির ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী গৌরব কালবেলাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে ব্যবসায়ীরা কোনো অভিযোগ দিয়েছে কি না—জানা নেই। কাউন্সিলর হিসেবে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। আমার জানা মতে, ব্যবসায়ীরা খুবই খুশি। যারা অসাধু লোক, তারা এসব অভিযোগ করছে। তারা বাজারের ভালো চায় না, এলাকার ভালো চায় না।’
প্রতিবেদকের কাছে কে অভিযোগ করেছে জানতে চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি গিয়ে কালকে বাজার বন্ধ করে দেন। তা না হলে আমি বন্ধ করে দেব। ভালো কাজ করলে এমন অভিযোগ আসবেই।’
কাপ্তান বাজারের পরিস্থিতি সম্পর্কে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘বাজারটি ঘিরে অনেক পক্ষ হয়ে গিয়েছিল। অনেক দিন বাজার বন্ধও ছিল। এই জাঁতাকলে পড়ে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা নগরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছিলেন। মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস উদ্যোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে বাজারটিকে একত্রিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব মুরগির পাইকারি বাজারে ইজারাদার নিয়োগ করা হবে। এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ইজারাদার নিয়োগের আগ পর্যন্ত খাস আদায় করা হচ্ছে।’