মাওলানা আখতার হুসাইন
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

এলো নবীপ্রেমের রবিউল আউয়াল

এলো নবীপ্রেমের রবিউল আউয়াল

শান্তি-সম্প্রীতিতে ভরা সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে সুরা আহজাবের ২১ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘তোমাদের জন্য রাসুল (সা.)-এর জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ, তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।’ হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনকে আদর্শরূপে গ্রহণ করলে সুফল তারাই পাবেন, যারা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করেন এবং আখিরাতের প্রতি ইমান রাখেন। উল্লিখিত গুণ অর্জন না করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা করলে শতভাগ সুফল লাভ করার সম্ভাবনা নেই। মানবজাতির জন্য মুক্তি ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহতায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। একটি নির্দিষ্ট সময় দুনিয়ার জীবনে দায়িত্ব পালনের পর মহান আল্লাহ তার প্রিয় হাবিবকে তার কাছে নিয়ে গেছেন

হিজরি ক্যালেন্ডারের তৃতীয় মাস ‘রবিউল আউয়াল’, যার অর্থ প্রথম বসন্ত। আলেমদের মতে, পবিত্র রমজানের পরই রবিউল আউয়ালের মর্যাদা। রমজান মাসের মর্যাদা অধিক হওয়ার কারণ এ মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে। আর রবিউল আউয়াল মাসের মর্যাদা অধিক হওয়ার কারণ, এ মাসে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসেই পৃথিবীর বুকে আগমন করেন এবং এ মাসেই পৃথিবীকে বিদায় জানান। প্রিয় নবীর স্মরণে এ মাসটিকে বিশ্ব মুসলিমরা নানা আয়োজনে উদযাপন করে। বিভিন্ন উপায়ে অন্তরের আবেগ ও ভালোবাসা প্রকাশ করে এ মাসে। আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘হে রাসুল আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরণ করো, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান: ৩১)। আর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ভালোবাসা ও তার প্রদর্শিত পথ অনুযায়ী জীবনযাপন করা ইমানের অংশ। এ প্রসঙ্গে ইমাম বোখারি (রহ.) তার কিতাবে স্বতন্ত্র একটি শিরোনাম এনেছেন, যার অর্থ—‘নবী করিম (সা.)-এর ভালোবাসা ইমানের অঙ্গ’। বিশিষ্ট সাহাবি আনাস (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ ইমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ আমি তার নিকট নিজ পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সব মানুষ হতে প্রিয় না হবো’। (বোখারি শরিফ: ১৫)।

আমলের দিক দিয়ে কারও মধ্যে যত কমতিই থাকুক, রাসুল (সা.)-এর প্রতি মহব্বত তার অন্তরে ততই গভীর। এ মহব্বতের কোনো তুলনা নেই। মুমিনের দিলে যে কারণে আল্লাহতায়ালার মহব্বত গভীর, সে কারণেই রাসুল (সা.)-এর প্রতি মহব্বত গভীর হওয়া স্বাভাবিক। আল্লাহপাক বলেন, ‘যারা ইমানদার, তাদের মহব্বত গভীর হওয়া স্বাভাবিক।’ (সুরা বাকারা: ১৬৫)। আল্লাহপাক আরও বলেন, ‘হে রাসুল! আপনি বলে দিন যে যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবেসে থাক, তাহলে আমার অনুকরণ করো, তাহলে আল্লাহই তোমাদের ভালোবাসবেন।’ এ দুটি আয়াত থেকে বোঝা যায়, মুমিন আল্লাহকেই বেশি ভালোবাসেন এবং এ ভালোবাসা প্রকাশের একমাত্র পথ হলো রাসুলের অনুসরণ, অনুকরণ ও আনুগত্য।

কিন্তু রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসা ছাড়া কি তার আনুগত্য সম্ভব? তাই আল্লাহকে ভালোবাসার স্বাভাবিক পরিণতিই হলো রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসা। তার প্রতি ভালোবাসা কী পরিমাণ থাকা উচিত সে কথা রাসুল (সা.) স্বয়ং স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ সত্যিকারের মুমিন হবে না, যে পর্যন্ত আমি তার নিকট তার পিতা, পুত্র ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় বলে গণ্য না হবো।’ আল্লাহপাক পিতা-মাতা, স্ত্রী-পুত্র, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজনকে ভালোবাসা কর্তব্য বলে জানিয়েছেন। কিন্তু কারও প্রতি ভালোবাসা যেন রাসুলের চেয়ে বেশি না হয়, বরং সবার চাইতে যেন রাসুলের প্রতি ভালোবাসা অধিকতর গভীর ও তীব্র হয়, সে কথাই এ হাদিসে বলা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, আমাদের ভালোবাসা রাসুলের জন্য সবচেয়ে বেশি কি না, তা যাচাই করার উপায় কী? এর হিসাব নেওয়া কঠিন নয়। অন্য কোনো মানুষের প্রতি ভালোবাসার দাবি পূরণ করতে গিয়ে যদি রাসুল (সা.)-এর নাফরমানি করা হয়, তাহলে বোঝা গেল যে, রাসুলের প্রতি ভালোবাসা অন্যের তুলনায় কম। বাস্তবে এটাই দেখা যায় যে, মানুষ প্রিয়জনের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে তাদের মঙ্গলের নিয়তেই এমন কিছু করে, যা করতে গিয়ে আল্লাহ ও রাসুলের হুকুম অমান্য করে। রাসুলের প্রতি গভীর ভালোবাসা থাকলে সে এমনটা করবে না। যারা এমন বোকামি করে তাদের সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে অন্য লোকের দুনিয়া বানানোর জন্য নিজের আখিরাত নষ্ট করে, কেয়ামতের দিন সে সবচেয়ে বেশি নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে।’

রবিউল আউয়াল মাস বেশ কিছু কারণে বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে। এর প্রথম কারণ হলো, এই মাসে পৃথিবীতে আগমন করেন বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত নবী কারিম (সা.)। দ্বিতীয় কারণ হলো, এ মাসেই আম্মাজান খাদিজাতুল কুবরা (রা.)-কে বিয়ে করেন আল্লাহর রাসুল (সা.)। তৃতীয় কারণ হলো, এ মাসেই মুসলমানদের জন্য সর্বপ্রথম মসজিদ তৈরি করা হয় কুবা নামক স্থানে এবং এটিই ইসলামের ইতিহাসে নির্মিত প্রথম মসজিদ। চতুর্থ কারণ হলো, এ মাসে আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন এবং যেদিন তিনি মদিনায় পৌঁছান, তা ছিল সোমবার ১২ রবিউল আউয়াল। পঞ্চম কারণ হলো, এ মাসেই বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর আরোপিত রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতার মাধ্যমে নিজের প্রভুর আহ্বানে সাড়া দেন তিনি।

কোরআন-হাদিসে এ মাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনো আমল বা ইবাদত পাওয়া যায় না। তবে কিছু আমল আছে অন্যান্য মাসের মতো এ মাসেও করা যায়। যেমন, প্রতি সোমবারে রোজা রাখা। সোমবারে রোজা রাখার ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে—হজরত আবু কাতাদা (রা.) বলেন, সোমবারের রোজা সম্পর্কে নবী কারিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এদিন আমি জন্মলাভ করেছি এবং এদিনেই আমি নবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছি বা আমার ওপর (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে। (মুসলিম: ১১৬২)। অন্য হাদিসের মধ্যে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহতায়ালার দরবারে) আমল পেশ করা হয়। আমার আমলগুলো রোজা অবস্থায় আল্লাহর সামনে পেশ করা হোক, এটাই আমি পছন্দ করি। (তিরমিজি: হাদিস, ৭৪৭)। এ ছাড়া প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বিজের তিনটি রোজা রাখার কথা এসেছে হাদিসে। এর প্রতি যত্নশীল হওয়া যেতে পারে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আ’স (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন, সারা বছর ধরে সিয়াম পালনের সমান।’ (বোখারি: ১১৫৯)।

পরিশেষে বলতে চাই, মানবজাতির সচেতন প্রত্যেক ব্যক্তিই হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে জীবনের সবক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ বলে মনে করেন। আমরাও মনে করি, শান্তি-সম্প্রীতিতে ভরা সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে সুরা আহজাবের ২১ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘তোমাদের জন্য রাসুল (সা.)-এর জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ, তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।’ হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনকে আদর্শরূপে গ্রহণ করলে সুফল তারাই পাবেন, যারা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করেন এবং আখিরাতের প্রতি ইমান রাখেন। উল্লিখিত গুণ অর্জন না করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা করলে শতভাগ সুফল লাভ করার সম্ভাবনা নেই। মানবজাতির জন্য মুক্তি ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহতায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। একটি নির্দিষ্ট সময় দুনিয়ার জীবনে দায়িত্ব পালনের পর মহান আল্লাহ তার প্রিয় হাবিবকে তার কাছে নিয়ে গেছেন। কিন্তু আল্লাহর নাজিল করা পবিত্র কোরআন ও তার হাবিবের আদর্শ আমাদের মাঝে আজও আছে। কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তার উম্মত বলে পরিচয়দানকারী মুসলিম উম্মাহর একটি বিশাল অংশ আজ দিকভ্রান্ত। তারা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ ছেড়ে মনগড়া বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে মুক্তি অন্বেষণ করছে। আল্লাহ প্রদত্ত জীবনবিধান ছেড়ে মিথ্যা মরীচিকার পেছনে ছুটে দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংস করছে। গোটা মানবজাতিকে দাঁড় করিয়েছে ধ্বংসের মুখোমুখি। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের আরও বেশি বেশি রাসুল (সা.)-এর সিরাত অধ্যয়ন করতে হবে। তার প্রদর্শিত নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করে ইসলামের বিজয়ের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আর বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অতুলনীয় সুমহান আদর্শ নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন এবং অন্যদের জীবনেও বাস্তবায়নের আহ্বান ও প্রচেষ্টাই মুসলিম উম্মাহর রবিউল আউয়াল মাসের অঙ্গীকার। এটাই হোক এবারের এই রবিউল আউয়াল মাসের শপথ। রবিউল আউয়াল মাসের বরকত, রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বত ও পরকালীন নাজাত মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে নসিব করুন।

লেখক: ইমাম ও খতিব

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সকাল ৯টার মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে যেসব জেলায় 

‘কার্টা ব্লু’ ভিসা নিয়ে বাংলাদেশিদের সতর্ক করল ইতালি

যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা ড. মুজিবের ছেলের বিয়েতে সস্ত্রীক তারেক রহমান 

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহত, হেফাজতের শোক ও সহায়তার আহ্বান

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন কর্মসূচি দিল ছাত্রদল

বনানীর সেলসিয়াস সিসা লাউঞ্জে পুলিশের অভিযান

অবশেষে মাদক সম্রাজ্ঞী আ.লীগ নেত্রী স্বপ্না আক্তার আটক

সর্বদলীয় বৈঠক শেষে ফেরার পথে জাগপা সভাপতিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম

আদাবরে পুলিশের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

নাটোরে ডা. আমিরুলকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি ড্যাবের

১০

গাজীপুরের কমিশনারের দায়িত্ব থেকে সরানো হলো নাজমুল করিমকে

১১

একাত্তরে ভুল করেছেন, এখনো ভুলের রাজনীতিতে আছেন : টুকু

১২

দুই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার সাকিব ও সিকান্দারকে ‘এক’ করলেন জুলফিকার!

১৩

বিএনপিকে এনসিপির শুভেচ্ছা / ‘আমরা তর্কবিতর্ক করব কিন্তু পারস্পরিক সৌহার্দ্য থাকবে’

১৪

পুরো সেপ্টেম্বরের পূর্বাভাস জানাল আবহাওয়া অফিস

১৫

নদীতে জাল ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা, জেলের মৃত্যু

১৬

ক্ষমা চাইলেন রিটকারীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া সেই শিক্ষার্থী

১৭

আহত চবি শিক্ষার্থীদের দেখতে চমেকে শাহজাহান চৌধুরী

১৮

জাঁকজমক আয়োজনে রুয়েটে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

১৯

দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু

২০
X