কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪, ০২:০০ এএম
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সেই দিনটি

আবুল ফজল

আবুল ফজল

আবুল ফজল বাঙালি শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, কথাসাহিত্যিক ও সাবেক উপাচার্য। তিনি ১৯০৩ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আবুল ফজল ১৯২৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৩১ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিটি এবং ১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

আবুল ফজল বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করে ১৯৪১ সালে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর কলেজে বাংলা বিষয়ের লেকচারার পদে যোগদান করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজে বদলি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৫৬ সালে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে যোগদান করেন। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৭৭ সালের ২৩ জুন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।

আবুল ফজল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজ (১৯২৬) প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৩০ সালে এর সম্পাদক হন। মুসলিম সাহিত্য সমাজের উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক কুসংস্কার ও অন্ধ শাস্ত্রানুগত্য থেকে মানুষকে মুক্ত করা। এ উদ্দেশ্যে তারা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাদের সে আন্দোলনের বার্তা সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৯২৬ সালে প্রকাশ করেন সমাজের মুখপত্র ‘শিখা’। মুসলিম সাহিত্য সমাজ ও শিখার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তারা ‘শিখাগোষ্ঠী’ নামে পরিচিত ছিলেন। এ গোষ্ঠী তখন ঢাকায় বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন শুরু করে। তাদের আন্দোলনের মূল কথা ছিল—‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’। শিখাগোষ্ঠীর এ আন্দোলনের মাধ্যমে আবুল ফজল যে মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতিশীল চিন্তার অধিকারী হয়েছিলেন, পরবর্তীকালে তার রচনায় সেই প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি সমাজ ও যুগসচেতন লেখক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। কথাশিল্পী হিসেবেও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। স্বদেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা, সত্যনিষ্ঠা, মানবতা ও কল্যাণবোধ ছিল তার সাহিত্যকর্মের প্রতিপাদ্য বিষয়। সমাজসচেতন বুদ্ধিজীবী হিসেবে আবুল ফজল ছিলেন নিঃশঙ্কচিত্ত। জাতির বিভিন্ন সংকটকালে তার নির্ভীক ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বাঙালি সংস্কৃতি এবং বাঙালি জাতির প্রতি ছিল তার গভীর অনুরাগ ও মমত্ববোধ। তাই ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকার যখন রবীন্দ্রনাথকে পাকিস্তানের আদর্শবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে রেডিও-টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তিনি এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান। আবুল ফজল উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, আত্মকথা, ধর্ম, ভ্রমণকাহিনি ইত্যাদি বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: চৌচির, প্রদীপ ও পতঙ্গ, মাটির পৃথিবী, বিচিত্র কথা, রাঙ্গা প্রভাত, রেখাচিত্র, দুর্দিনের দিনলিপি প্রভৃতি। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পদকে ভূষিত হন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে। ১৯৮৩ সালের ৪ মে চট্টগ্রামে এ গুণীজনের জীবনাবসান ঘটে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মালদ্বীপে ইন্টারন্যাশনাল আইকনিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন কামরুল ইসলাম

আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখছে জামায়াত 

যাচাই-বাছাই না করেই ‘ভুয়া খবর দিয়েছে ভারতীয় মিডিয়া’

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জয়ের প্রশংসা মার্কিন মিডিয়ায়

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের কাছে না দিতে অবস্থান কর্মসূচি

চোর সন্দেহে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

চন্দ্রঘোনা-রাইখালী নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু

আখতার হোসেনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি, যা জানালেন তাসনিম জারা

রিমার্কের অথেনটিক পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখে সন্তুষ্ট ভোক্তা অধিকার ডিজি

বিশ্লেষণ / মধ্যপ্রাচ্যে ধাক্কা খেয়ে আফ্রিকার দিকে ইরান

১০

জুলাই আহতদের অনুদানের চেক পেলেন নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা

১১

‘দিল্লির দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়েছে ওয়াশিংটনের গোলামি করতে নয়’

১২

টিস্যুর প্যাকেটে মিলল লাখ টাকার ইয়াবা

১৩

ঢাকার বাতাসও ‘অস্বাস্থ্যকর’ 

১৪

যেসব এলাকায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না আজ 

১৫

ছয়টি যুদ্ধবিমান খুইয়ে ভারত এখন কোন পথে?

১৬

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে ঝড়

১৭

পাহাড়ি ঢলে ভাঙল সেতু, বিপাকে ১১ গ্রামের মানুষ

১৮

ভারতের বড় বড় যুদ্ধবিমান ‘ঘুড়ির মতো ভেঙেছে’ পাকিস্তান

১৯

পাকিস্তানকে সমর্থন / মুসলিম দুই দেশের ২৩টি ভার্সিটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন

২০
X