সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিশু সামিয়ার পাশে ঢাকার পুলিশ সুপার

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান ও কিশোরী সামিয়া। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান ও কিশোরী সামিয়া। ছবি : সংগৃহীত

শিশু সামিয়া—মাত্র ১২ বছর বয়সেই জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ছিল সে। জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত এই কিশোরীর দুঃসহ যন্ত্রণা যখন থামার নাম নিচ্ছিল না, তখনই তার পাশে দাঁড়ান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান।

ফুসফুসে রক্ত সঞ্চালনে জটিলতা, হৃৎপিণ্ডের ভালভের ক্রমাগত দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা আর অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনে বারবার অজ্ঞান হয়ে যেত সামিয়া। গরিব পোশাক শ্রমিক শামীম হোসেন ও গৃহিণী রীমা আক্তারের দ্বিতীয় সন্তান সামিয়ার চিকিৎসা যখন থেমে যেতে বসেছিল, তখনই একটি সংবাদ বদলে দেয় তার ভাগ্য।

‘অভাবের কারণে চিকিৎসা বন্ধ শিশু সামিয়ার’—এমন একটি হৃদয়বিদারক সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিষয়টি চোখে পড়ে পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান ও তার সহধর্মিণী রিফাত জাহানের। এরপরই শুরু হয় মানবিকতার এক নতুন অধ্যায়।

সামিয়ার পড়াশোনার সব দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি ২৩ জুন সামিয়াকে ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয় ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মো. গোলাম সরোয়ারের তত্ত্বাবধানে। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৮ জুলাই হয় সফল ওপেন হার্ট সার্জারি। দীর্ঘ সাত ঘণ্টার এ অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক ডা. মো. শরিফুজ্জামান।

অপারেশনের পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেই সামিয়ার মুখে যেন প্রাণ ফিরে আসে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) হাসপাতাল ছাড়ার পথে বাবা শামীম হোসেন কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, চোখের সামনে মেয়ের মৃত্যু দেখতে দেখতে অসহায় হয়ে গিয়েছিলাম। স্যার (এসপি আনিসুজ্জামান) কোনো প্রচার না করেই সব দায়িত্ব নিয়েছেন। তার ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না।

একই আবেগঘন সুরে সামিয়াও বলে ওঠে, আমি তো মরেই যেতাম। আল্লাহ তাকে পাঠিয়েছিলেন আমাকে বাঁচাতে।

ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, স্যার সবসময় আড়ালে থেকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভালোবাসেন। মানবিকতার এমন দৃষ্টান্ত আজকের সমাজে খুব বিরল।

এসপি আনিসুজ্জামানের এ মানবিক ভূমিকা শুধু একটি শিশুর জীবন বাঁচায়নি, বাঁচিয়েছে একটি পরিবারের হাসি—যেখানে পুলিশের পোশাকে দেখা গেছে এক নিঃস্বার্থ অভিভাবককে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, এমন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা সমাজে আলোকবর্তিকার মতো। তাদের হাত ধরেই বদলাবে মানুষের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের দৃষ্টিভঙ্গি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্রিটিশ সংসদে খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন

চায়ের দোকানে কৃষককে গুলি করে হত্যা

তারেক রহমান এসএসএফের নিরাপত্তা পাবেন কিনা, জানালেন রিজওয়ানা 

খালেদা জিয়ার আপসহীন অবস্থান জাতির জন্য চিরকাল স্মরণীয় : মাসুদ সাঈদী

শাকসু নির্বাচনে ২৫১ জনের মনোনয়ন সংগ্রহ, নারী প্রার্থী ৩৪

গোয়াল ঘরে আগুনে পুড়ে ৫ গবাদি পশুর মৃত্যু

বিএনপি উন্নয়নের রাজনীতি করে, জামায়াত বিশ্বাসঘাতকতার : কাজী আলাউদ্দিন

চিলমারীতে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

খালেদা জিয়াকে কারাগারে স্লো পয়জনিংয়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছে : খায়রুল কবির 

১০

চট্টগ্রামে আট দলের বিভাগীয় সমাবেশ শুক্রবার

১১

খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রার্থনা

১২

লন্ডনে জামায়াত সেক্রেটারি / সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ নেতৃত্বের গুণগত পরিবর্তন

১৩

সুখবর পেতে যাচ্ছেন তারেক রহমান

১৪

ভারতে এলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

১৫

খালেদা জিয়া ঐক্যের প্রতীক : আমিনুল হক

১৬

বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার

১৭

নভেম্বরে আড়াই লাখ ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করেছে ডিএনসিসি

১৮

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণে সহপাঠীসহ ৩ জন রিমান্ডে

১৯

কাতারের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে মধ্যরাতে

২০
X