সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২
হামিদ মিয়া
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪০ এএম
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অপশাসন, স্বেচ্ছাচারিতা ও বৈষম্যের পটভূমি

অপশাসন, স্বেচ্ছাচারিতা ও বৈষম্যের পটভূমি

সপ্তম জাতীয় সংসদে তৎকালীন স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী তার ক্ষমতার অপব্যবহারের চরমতম উদাহরণ রেখে গেছেন, যা যুগে যুগে অত্যন্ত ঘৃণাভরে স্মরণ করা হবে। তিনি ২০০০ সালে একটি বিশালসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আত্তীকরণ করেন, যাদের নিয়োগের বৈধতার বিষয়টি ন্যায়বিচারের জন্য প্রতীক্ষা করছে। আত্তীকৃত কর্মকর্তাদের অনেকেই প্রিভিলেইজড, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন, যাদের কারও কারও বয়স ছিল ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে। একই সঙ্গে তদানীন্তন স্পিকার করে গেলেন আরও ঐতিহাসিক অপকর্ম। সংসদ কমিশনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই তিনি একক সিদ্ধান্তে জারি করলেন আত্তীকৃত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি জ্যেষ্ঠতা নীতিমালা। আত্তীকৃতদের জ্যেষ্ঠতা প্রদানের এরূপ স্বেচ্ছাচারিতা বোধকরি কোনোকালে কোনো খারাপ সম্রাটও করেননি।

এমন পরিস্থিতিতে নিতান্ত নিরুপায় হয়ে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে আত্তীকরণ এবং জ্যেষ্ঠতা নীতিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০১ সালে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা করা হয় (রিট মামলা নম্বর: ৪৭১৪)। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তখন ওই রিট মামলায় আত্তীকরণের পক্ষে আইনি সহায়তা প্রদান করেছিলেন।

হাইকোর্ট ২০০৬ সালে আত্তীকরণ এবং আত্তীকৃত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি জ্যেষ্ঠতা নীতিমালা অবৈধ মর্মে রায় প্রদান করেন। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে ন্যায়বিচার পান সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে আত্তীকৃত কর্মকর্তারা ২০০৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল আপিল করেন (সিভিল আপিল নম্বর: ২৩৪)। কিন্তু ওই সময়ে কেসের শুনানি হলে আপিলে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় তখন আত্তীকৃতরা কেস নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। সংসদ সচিবালয় এবং আত্তীকৃত কর্মকর্তারা ১৩ বছর পর আপিল বিভাগে তাদের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে বিবেচনায় ২০২০ সালে অ্যাপিলেট ডিভিশনে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে ওই কেসের আপিল শুনানির পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, তৎকালীন রাষ্ট্রপতির আপন ভাই মরহুম আব্দুল হাই একজন আত্তীকৃত কর্মকর্তা ছিলেন। করোনাকালে ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে আপিল বিভাগের রায় মোতাবেক হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়। ফলে আত্তীকৃত কর্মকর্তারা বৈধতা পান এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় স্থায়ী রূপ লাভ করে।

আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট এসব কর্মকর্তা চাকরির বৈধতা পেয়ে সীমাহীন ক্ষমতা প্রদর্শন এবং সংসদ সচিবালয়ের সবক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। এতে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। পদোন্নতি/পদায়ন সবক্ষেত্রেই তাদের অভিলাষ বাস্তবায়ন করা হয়। যেখানে স্পিকার, চিফ হুইপ, হুইপ এবং সংসদ সচিব সবাই তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে অনৈতিকভাবে পদোন্নতিসহ সবরকম সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন।

আত্তীকরণের বৈধতার বিষয়ে মামলা বিচারাধীন থাকার ফলে প্রায় দেড় যুগের অধিক সময় পর্যন্ত সংসদ সচিবালয়ে আত্তীকরণের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টি পুনঃপুনঃ সংঘটিত হয়নি এবং পিএসসির মাধ্যমে বিধি মোতাবেক নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়। মামলাটি না হলে তৎপরবর্তী প্রতিটি সংসদে আত্তীকরণ চলমান থাকার সম্ভাবনা ছিল এবং সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে আত্তীকরণের বিষয়টি বৈধতা লাভ করায় ভবিষ্যতে সংসদ সচিবালয় তথা সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এটিকে রেফারেন্স হিসেবে নিয়ে পুনঃপুনঃ আত্তীকরণের দ্বার উন্মোচিত হলো, যা কোনো যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কেননা এর ফলে দলীয় ও সুবিধাভোগীদের কোনোরূপ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ছাড়া অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের দ্বার উন্মোচিত হলো। আইনপ্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক আইনের এরূপ অপপ্রয়োগ স্পিকার তথা জাতীয় সংসদকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে শতবার। সময়ের পরিক্রমায় আপিল বিভাগের এ রায়ও খারাপ নজির হিসেবে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। উপরন্তু, সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেখানে মেধার অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতা প্রাণ দিল, সেখানে জাতীয় সংসদের মতো জায়গায় মেধার পরিবর্তে আত্তীকৃতদের চাকরিতে পদোন্নতিসহ সব সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ফলে বৈষম্য ও বঞ্চনা বৃদ্ধি পাচ্ছে যা দ্রুত নিরসন করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে যেন কোনো প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিয়োগ আর না হয় এবং এরই মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের ২০০৬ সালের রায় আপিল বিভাগ ২০২১ সালে রহিত করার ফলে যে সুযোগ-সুবিধা মেধাবীদের বঞ্চিত করে আত্তীকৃত ও চাটুকার কর্মকর্তারা গ্রহণ করেছেন, তার প্রতিকারের লক্ষ্যে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।

সংসদ সচিবালয়ে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি: বিগত তিনটি পার্লামেন্টে সংসদ সচিবালয়ের বিভিন্ন পদে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে। এমনকি পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্পিকারের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার স্ত্রী, তার অফিসে কর্মরত স্টাফদের আত্মীয়স্বজন, সংসদ সচিব ও নিয়োগ কমিটির প্রধান এবং সদস্যদের ব্যক্তিগত পরিচিতদের দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ও যথাযথ তদন্ত করলে নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যাবে।

পদোন্নতিতে অনিয়ম: সংসদ সচিবালয়ের সব পর্যায়ের পদোন্নতিতে দলীয় বিবেচনাকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সংসদ সচিবসহ কমিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কর্তৃপক্ষের অভিপ্রায়ের বাস্তবায়নে বিধিবিধানের ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক তা বাস্তবায়ন করে স্পিকারের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন।

যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতাও করা হয়নি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আবেদন সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তাদের সিনিয়রিটির বিষয়টি অবহিত হওয়ার সুযোগ প্রদান করেনি। স্পিকারের পছন্দমতো যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দিতে সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। এ পদোন্নতিতে কোনোরূপ সিনিয়রিটি না মেনে আত্তীকৃত এবং চাটুকার কর্মকর্তাদের (যারা নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ্যে প্রদান করে থাকে) পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে।

অন্যদিকে উপসচিব ও পরিচালক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বাছাই কমিটির সুপারিশ সত্ত্বেও অনেক যোগ্য ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে। সুপারিশকৃতদের তালিকা হতে স্পিকার তার ইচ্ছামাফিক পছন্দের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদান করেছেন, যার নজির সংসদ সচিবালয়ে নেই। পদোন্নতিতে এরূপ স্বেচ্ছাচারিতার মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ায় বঞ্চিত কর্মকর্তারা এর প্রতিকারের আশা বুকে নিয়ে অপেক্ষায় আছেন।

সংসদ সচিবালয়ের বাসা বরাদ্দে অনিয়ম: সংসদ সচিবালয়ের বাসা বরাদ্দে ক্ষমতার সীমাহীন অপব্যবহার করা হয়েছে। প্রাধিকারের বাইরের পছন্দের কর্মকর্তাকে বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাসা বরাদ্দ কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি অথবা কর্তৃপক্ষের ফরমায়েশ মতো কমিটি সুপারিশ করে পছন্দের কর্মকর্তাকে বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এমনকি দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীকে উপসচিব বা যুগ্ম সচিবদের জন্য নির্ধারিত বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন খালি থাকা সত্ত্বেও বাসা বরাদ্দ প্রদান করা হয়নি। ফলে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতি: জাতীয় সংসদের প্রকল্প গ্রহণে এবং বাস্তবায়নে অনিয়ম করা হয়। জাতীয় সংসদের উত্তর প্লাজার অফিস, মেডিকেল সেন্টারের উন্নয়ন, পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের সংস্কার, জাতীয় সংসদের অভ্যন্তরের ফুটপাত সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে। এখানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও চিফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরীর সম্পৃক্ততা ছিল।

জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি কার্যক্রম অনৈতিকভাবে স্থগিতকরণ: জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি একটি রেজিস্টার্ড সমিতি, যার মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের বৈধ দাবি-দাওয়ার বিষয়টি পেশ করতে পারত। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আত্তীকৃত কর্মকর্তাদের অভিপ্রায় মোতাবেক ওই সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি সমিতির জন্য নির্ধারিত অফিস কক্ষটির বরাদ্দও বাতিল করা হয়। আত্তীকরণের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করার কারণেই এ সমিতির কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয় মর্মে প্রতীয়মান হয়, যা জাতীয় সংসদের মতো একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের নীতিবিরুদ্ধ। এটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে অগণতান্ত্রিক আচরণের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।=

স্পিকারের পক্ষপাতিত্ব ও শপথ ভঙ্গ: বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার এবং সর্বাধিক সময়ের জন্য স্পিকারের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও জাতীয় সংসদ বা এর সচিবালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কোনো কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। বিগত তিনটি সংসদে কার্যকর বিরোধী দল না থাকায় সংসদ পরিচালনায় তার নিরপেক্ষতা, দক্ষতা ও যোগ্যতা অপরীক্ষিত ও প্রশ্নসাপেক্ষ। সংসদ পরিচালনায়ও তিনি সবসময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বা ইঙ্গিতের ওপর নির্ভর করতেন। গত ১৫ বছরে সংসদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যপ্রণালি-বিধি কমিটি এবং বিশেষ অধিকার কমিটির কোনো বৈঠক করেননি। এ ছাড়া তিনি সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। দীর্ঘ এ সময়ে তিনি শুধু আওয়ামী লীগের তোষণ, আত্তীকৃত কর্মকর্তাদের এবং সুবিধাভোগী চাটুকার শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বাসন ও স্বার্থসংরক্ষণ করেছেন। জাতীয় সংসদে তিনি তাকে প্রদত্ত নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি নিরপেক্ষতা রক্ষা করেননি এবং তার শপথ ভঙ্গ করেছেন।

সংসদ মানেই আওয়ামী লীগ, কিশোরগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ: স্পিকার, আওয়ামী লীগ, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ যেন সমার্থক শব্দ হয়ে গেছে। শুধু আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন, সব সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখাপেক্ষিতা, আওয়ামী সমর্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থসংরক্ষণই স্পিকারের মুখ্য দায়িত্ব রূপে প্রতিভাত হয়েছে। স্পিকারের স্পাউসের বাড়ি এবং তার একান্ত সচিবের বাড়ি কিশোরগঞ্জ হওয়ায় তিনি কিশোরগঞ্জসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধাদি প্রদান করেছেন। সংসদ সচিবালয়ের সব অনিয়মে স্পিকারের একান্ত সচিব কামাল বিল্লাহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। ফলে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘ দেড় দশক পদে পদে বিড়ম্বনা ও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন।

প্রত্যাশা: গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নবজাগরণে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় গর্বিত। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো জাতীয় সংসদও বঞ্চনামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন হবে এটাই প্রত্যাশা। সংসদ ভেঙে যাওয়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হলেও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে তার দোসর ও অশুভ শক্তি বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে। প্রশাসনের সুবিধাভোগী ও আওয়ামী অনুগত কর্মকর্তা এবং আত্তীকৃত কর্মকর্তারা এখনো সংসদ সচিবালয়ে সদর্পে বিচরণ করছেন। এসব কর্মকর্তা থেকে সংসদ সচিবালয়মুক্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আইনসভা বা জাতীয় সংসদ শিগগিরই স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত হবে এবং চিরকালের জন্য সব বঞ্চনা ও বৈষম্যের অবসান হবে—এটাই প্রত্যাশা।

লেখক: গবেষক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

টানা ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জবির ভিসি

৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের নতুন বার্তা দিল এনসিপি

ম্যানইউর জয়হীন ধারা অব্যাহত, এবার ফুলহামের মাঠে ড্র

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা-পেশাজীবীদের নিয়ে ‘আগামীর পথ’ অনুষ্ঠিত

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন তৌহিদ আফ্রিদি

তারের পর এবার চুরি হলো সেতুর রিফ্লেক্টর লাইট

১০

‘এবার আমাদের পালা’ স্বরূপ আচরণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে : টিআইবি

১১

ভূমি অধিগ্রহণে আটকে আছে ইউলুপ, ইউটার্নে মরছে মানুষ!

১২

কনে দেখতে যাওয়ার পথে নৌকাডুবি : নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার

১৩

থাইল্যান্ডের ক্লাবে আবার ভাইরাল ‘কাঁচা বাদাম গার্ল’ অঞ্জলি

১৪

চাকসুতে সমকামিতা সমর্থক ও মাদকাসক্তদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি

১৫

ঠাকুরগাঁওয়ের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১

১৬

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০ শয্যার এইচডিইউ উদ্বোধন

১৭

এবার তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার

১৮

রাকসুতে প্রথম দিনে ৫ জনের মনোনয়ন সংগ্রহ 

১৯

ফিলিস্তিনিদের ৩০০০ জলপাই গাছ উপড়ে ফেলল ইসরায়েলি বাহিনী

২০
X