আলম রায়হান
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

পাঞ্জেরী কবিতার বাস্তবতায় বাংলাদেশ

বাস্তবতায় বাংলাদেশ
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

চারদিকে কথামালার প্লাবনে দেশ ও রাজনীতির প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন আমজনতার পক্ষে প্রায়ই অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে এটি সবাই টের পাচ্ছেন, আলামত শুভ নয়। দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। তাদের মনের আকুতি প্রকাশের মাধ্যম হতে পারে ফররুখ আহমদের কবিতা ‘পাঞ্জেরী’। যে কবিতায় কবি লিখেছেন—

“রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরী?

এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?

সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?

তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;

অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরী?”

ফররুখ আহমদের পাঞ্জেরী কবিতার আকুতি অদ্ভুতভাবে মিলে যায় বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে। স্মরণ করা যেতে পারে, এ দেশের মানুষ বারবার আশায় বুক বেঁধেছে, ভুলে দাঁড় টেনেছে। আর অল্প সময়ের ব্যবধানে নিরাশ হয়েছে। তা হোক ৭১, ৯০ অথবা ২৪ সাল। কোনোবারই আশার পারদ প্রতাশিত ঘরে বেশি সময় থাকেনি। আর এই সেদিন, ১৩ জুন টানেলের শেষ প্রান্তে আশার যে আলো দেখা গিয়েছে, তাও এরই মধ্যেই ফিকে হতে শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মোদ্দা কথা, ‘রাত পোহাবার’ লক্ষণ স্পষ্ট নয়। এদিকে অনেকেরই জানা, বোয়াল মাছের পেটে পুঁটি মাছের বাস্তবতায় ভারতের কবলে আছে বাংলাদেশ। আবার বিশ্ব প্রেক্ষাপটও খুবই ঘোলাটে। বিশ্বব্যাপী মুসলমান জনগোষ্ঠীর কপালে যে কী আছে, তা কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে ইরাক-লিবিয়া-সিরিয়ায় প্রকটভাবে প্রমাণিত হয়েছে। নগ্ন দৃষ্টান্ত হয়ে আছে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করে দেওয়ার ইসরায়েলি চলমান নৃশংসতা। এ ধারায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে ইরান। ধারণা করা হয়, ইরানকে এবার ধ্বংস করা হবে, না হয় শাব্দিক অর্থেই মধ্যপ্রাচ্যের আর দশটা দেশের মতোই নতজানু হয়ে টিকে থাকতে হবে দেশটিকে। সব মিলিয়ে বিশ্বে এক বৈরী প্রবণতায় আছে মুসলিম জনগোষ্ঠী। বলা বাহুল্য, এই বিশ্ব বাস্তবতা থেকে বাংলাদেশ মোটেই বিচ্ছিন্ন নয়। কিন্তু এদিকে আমাদের দেশের বখেদমতে হুজুরে আলাদের তেমন মনোযোগ আছে বলে মনে হয় না। বরং কেবলই চলছে পুরোনো শিবের গীত!

মুজিবের আমলে শুধু পাকিস্তানের দোষের কাওয়ালি গাওয়া হতো, জিয়ার আমলে শোনা গেছে, সব দোষ মুজিবের। সেই পুরোনো ধারার গীত লাগাতরভাবেই চলে আসছে। অতীতের গীত বিরামহীন। কিন্তু আমাদের দশা কতটা মাজুল, এ থেকে উত্তরণের জন্য কী করা জরুরি, তা নিয়ে সুদূরপ্রসারী কোনো ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। কাছাকাছি বিষয়েও কতটা ভাবা হয়, তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। যেমন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সাক্ষাৎ না দেওয়া এবং যুক্তরাজ্যের বাজেটে বৈদেশিক সাহায্য নাটকীয়ভাবে হ্রাস করার ফল নিয়ে ভাবার কাজটি করছে কে! প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত টপ টেন দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। অবশ্য এ বিষয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বিবিসির সঙ্গে বেশ আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গেই বলেছেন, ‘প্রথমত, আমাদের এই সংকটকালীন সময়ে কিছু সাহায্য পেলে খুব খুশি হব। কিন্তু যদি তা না পাই, তবুও আমরা আমাদের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’ সাধু, সাধু! এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, যুক্তরাজ্য আমাদের ‘খুশি’ করার জন্য ব্যাকুল হয় কি না। আর নিজস্ব আয় বৃদ্ধির ‘প্রচেষ্টা’ কতটা হালে পানি পায়, তাও দেখার বিষয়। কেউ কেউ তো ২০২৬ সালে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথাও বলছেন। সঙ্গে এও স্পষ্ট, দেশের অর্থনীতির অবস্থা মোটেই ভালো নয়। আর রাজনীতির অবস্থা? তা তো গোপালভার চরিত্রের সংলাপের মতো, ‘চারদিক ধুলোয় অন্ধকার, কে কার...!’

দেশের এ পরিস্থিতি হঠাৎ হয়নি, ক্রমাগতভাবে সৃষ্টি হয়েছে; যার মূলে প্রধানত রয়েছে ক্ষমতার অনৈতিক লড়াই। জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখা এবং বলপ্রয়োগে ক্ষমতাসীনকে তাড়ানোর প্রবণতায় আক্রান্ত আমাদের রাজনীতি। ধাওয়া না খেয়ে ক্ষমতার মসনদ থেকে নামার মানসিকতা আমাদের দেশে কারোরই নেই। এ ধারার মধ্যে ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতাসীন হয়ে শেখ হাসিনা অকল্পনীয় সুশীল প্রবণতায় ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণভাব ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন, যা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র দৃষ্টান্ত। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হয়ে তিনি দ্রুত দানব হয়ে উঠেছেন। নাকি পরদেশি দানব তার ওপর আসর করেছে, অথবা তাকে কৌশলে দানবীয় একমুখী পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে; তা গভীর বিশ্লেষণের দাবি রাখে। তবে এটি বলা যায়, দেশের রাজনীতির ধারার বারোটা বাজাবার চৌদ্দ আনা দায় শেখ হাসিনার। আবার বাকিদের ধোয়া তুলসীপাতা মনে করার কোনো কারণ নেই। তাদের দায় দুই আনা হলেও অবশ্যই আছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির সর্বনাশের ষোলো আনা পূর্ণ হয়েছে। যে ধারা থেকে মুক্ত হওয়া সহজ হবে বলে অতি আশাবাদী মানুষও বিশ্বাস করতে ভরসা পান না। এ বাস্তবতার মধ্যে রাজনীতির কালো মেঘে নানান শকুনের চক্করের মধ্যেও প্রশান্তির বার্তা নিয়ে আসে ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক। এ বৈঠকের আলোকে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি থেকে তারেক রহমান এবং এপ্রিলে অনুষ্ঠানের ঘোষণা থেকে ড. ইউনূস সরে এসে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি সমঝোতায় উপনীত হয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন। এরপরও এটি দেশবাসীর কাছে প্রচণ্ড খরায় প্রশান্তির বৃষ্টি হিসেবেই বিবেচিত হয়েছে। কিন্তু তাতে কি? নিশ্চিতভাবে কি বলা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে? উত্তর নেতিবাচক। কারণ, যৌথ ঘোষণা অনুসারে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য একজোট হওয়ার বদলে অন্যরকম কচলাকচলি পর্ব চলছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সংকট কি কাটল?

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ১৩ জুনের বৈঠকের পর আপাতদৃষ্টিতে ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক সংকট উত্তরণ’ হয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু কার্যত সংকট কতটা দূর হয়েছে, তা নিয়ে নানান বিশ্লেষণ চলছে। রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকদের ধারণা, প্রকৃত অর্থে রাজনৈতিক জটিলতা এখনো কাটেনি, বরং আগামীতে রাজনৈতিক মেরূকরণ আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরে ছাড় দিয়ে হলেও ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, উল্টো আলামত। ফলে নির্বাচন সত্যিই ফেব্রুয়ারিতে হবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করছেন। যদিও সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বলছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ভিন্নমত নেই। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের সমঝোতায় তারা অখুশিও নন। তবে সরকার কেন শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিল, সেটি নিয়ে তাদের মনঃকষ্ট প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরনের ঘটনাকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের মতে, এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার এবং সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কেননা, নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব হচ্ছে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিত করা। শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা তার নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের প্রকাশ ঘটায়। সরকার এভাবে একটি দলের সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দিতে পারে কি না এবং সেটি কতটা নৈতিক, তা নিয়ে ‘যদি-কিন্তু-তথাপি-অথচ’ গোছের প্রশ্ন বেশ জটিল হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জামায়াতের প্রতিক্রিয়া। বর্তমান বাস্তবতায় অত্যন্ত প্রভাবশালী এই দলটি মনে করে, প্রধান উপদেষ্টা গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর লন্ডন সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে বেমানান। এর মাধ্যমে ড. ইউনূস একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে। ১৫ জুন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি জামায়াত। বরং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ১৭ জুনের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার দ্বিতীয় দিনে জামায়াত যোগ দেয়নি। এদিকে কিছুটা ভিন্ন সুরে কথা বলেছে অধুনা জামায়াতের সুহৃদ ইসলামী আন্দোলন। চরমোনাই পীরের দলটি মনে করে, ‘১৩ জুন বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ডিসেম্বর থেকে সরে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টাও শর্তসাপেক্ষে তা বিবেচনার কথা বলেছেন। নিজস্ব অবস্থানকে যৌক্তিক কারণে পুনর্বিবেচনা করার এ ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’ এরপরও কিছুটা নক্তা লাগিয়ে রাখা হয়েছে। শীর্ষ দুই নেতার বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে সরকারের উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের শব্দ প্রয়োগকে বিস্ময়কর আখ্যা দিয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতা আতাউর রহমান বলেছেন, “ড. ইউনূস বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। তারেক রহমান একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। এ কথা সত্য, কিন্তু তারেক রহমান দেশের রাজনীতির একক প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাদের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ হলেও আক্ষরিক অর্থে এটা দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে একজন রাজনৈতিক নেতার সংলাপ; কিন্তু প্রেস ব্রিফিংয়ে বারবার ‘যৌথ বিবৃতি’ বলা বিস্ময়কর। একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রের ‘যৌথ বিবৃতি’ প্রদান শোভনীয় নয়।” সবচেয়ে নাখোশ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। এই দলটি হতাশাও প্রকাশ করেছে। হতাশার কারণ, ইউনূস-তারেক বৈঠকে সংস্কার ও বিচার গুরুত্ব না পাওয়া।

এসব প্রতিক্রিয়ার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিএনপি। ‘একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন’ বলে জামায়াত যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে; তার জবাব দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি এও বলেছেন, নতুন রাজনৈতিক দলটি (এনসিপি) লন্ডন বৈঠকের ঘোষণাকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছে। এ ক্ষেত্রে দলীয় দৃষ্টির ঊর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তাদের আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। কিন্তু বিরাজমান বাস্তবতায় কে কার পরামর্শ গুরুত্ব দেবে তা বলা কঠিন। তবে এটি সহজেই বলা চলে, ফররুখ আহমদের ‘পাঞ্জেরী’ কবিতার বাস্তবতায় আছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় করণীয় প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহর উচ্চারণ উল্লেখ করা যায়, ‘বর্তমান সরকারের পক্ষে সব গুছিয়ে নির্বাচন করাটা অসম্ভব কিছুই নয়। এজন্য উভয়পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। বোঝাপড়ার কোনো বিকল্প নেই। যেমন ড. ইউনূস এপ্রিল থেকে সরে এসেছেন। তারেক রহমান ডিসেম্বর থেকে সরে এসেছেন। এভাবে একটা আপসরফা হয়েছে আরকি। এটাকে অভিনন্দিত করতেই হবে। এটা যাতে ঠিক থাকে, সেজন্য সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা কিছু মহল দূরত্ব সৃষ্টি করতে চাইছে।’

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের দেশে প্রয়োজনীয় কাজটি কি করা হয়? উদাহরণ বিরল। এরপরও আশা তো করতেই হবে। দেখা যাক এ আশার ভেলায় ভাসমান দেশবাসীকে ড. ইউনূস কোন গন্তব্যে নিয়ে যান। অথবা নিয়ে যেতে পারেন। কারণ, কে কোথায় বাঁধা, তা আগেভাগে জানা কঠিন। কাজেই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয়ের বিষয়টি একবাক্যে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই। প্রসঙ্গত, ১৪ জুন বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের শিরোনাম হচ্ছে, ‘নির্বাচন কি ফেব্রুয়ারিতেই হবে?’ এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো এখনই মিলবে না। কিন্তু এটি নিশ্চিতভাবে বলা চলে, নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথে হাঁটলে দেশের পরিস্থিতি চরম জটিলতায় নিমজ্জিত হতে পারে!

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স / রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ

কলম্বোতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ফিরেছেন মিরাজ

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হাওরে হাউসবোট দখলের অভিযোগ 

বৃহস্পতিবার শুরু এইচএসসি, অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

অতর্কিত হামলায় ইসরায়েলের ৭ সেনা নিহত

দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন ওএসডি

লাল ডিম না সাদা ডিম, কোনটির পুষ্টিগুণ বেশি

ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে দুটি সংবাদমাধ্যম, ট্রাম্পের ক্ষোভ

মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন / বাঙ্কার বাস্টারেও ধ্বংস হয়নি ইরানের পরমাণু কেন্দ্র

ইরানে ফের হামলার চেষ্টা, ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত

১০

রাজশাহী মহানগরীর থানা-ওয়ার্ড যুবদলের কমিটি গঠনে সতর্ক চিঠি

১১

ভুল রক্ত পুশ করায় মৃত্যুর মুখে রোগী, পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও

১২

একযোগে ৩৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা

১৩

চিনি খেলে কি ডায়াবেটিস হয়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা 

১৪

খামেনির বিপদ কাটেনি, সামাল দিতে হবে নিজ জাতির ক্ষোভ

১৫

ইরানে যুদ্ধের অবসান : তেহরানের বর্তমান পরিস্থিতি

১৬

মাঝ নদীতে ভাসছিল ৪০ যাত্রীসহ ট্রলার, এরপর যা ঘটল

১৭

বিএনপিতে দখলবাজ নেতাকর্মীর স্থান নেই : মিফতাহ্ সিদ্দিকী

১৮

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম

১৯

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

২০
X