সেশনজট সমস্যার সমাধান চাই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার উদাসীনতার শেষ নেই। কভিড-১৯-এর সময় সেশনজট সমস্যার সমাধানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা পদ্ধতি চালু রাখে। আবার এইচএসসি পর্যন্ত অটো পাস দেওয়া হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা হতাশা ও শঙ্কার মধ্য দিয়ে যাবে—এটাই স্বাভাবিক।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয়টির ২ হাজার ২৮৩টি অধিভুক্ত কলেজে অধ্যয়ন করে ২৮ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। শিক্ষার মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই; কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সেশনজট। চার বছরের কোর্স শেষ করতে পাঁচ, ছয় এমনকি সাত বছরও লেগে যায়। সেশনজট জটিলতায় ডিগ্রি থেকে মাস্টার্স, কারোর কোনো নিস্তার নেই। কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বহু সমস্যায় ভরা এই বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কখন পরীক্ষার তারিখ ও ফলাফল দেবে, তারও কোনো ঠিক নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের হতাশার কোনো সীমা নেই আর সেশনজটের যেন কোনো সমাধান নেই। আরও খারাপ লাগে যাদের সঙ্গে স্কুল-কলেজ শেষ করেছি; তারা বিবিএ, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিএসসি শেষ করে চাকরি করে, কেউ কেউ এমবিএ, এমএসসিও শেষ করার প্রস্তুতিতে লেগে যায় আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বসে থাকে অসহায়ের মতো। বেশি টাকা খরচ করে কোনো প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়তে যেতে পারিনি বলে কি আমাদের এভাবে হতাশার মধ্যে দিন কাটাতে হবে? এই সেশনজটের ইতিহাস বহু পুরোনো; কিন্তু এর কি পরিবর্তন হবে না? শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর সেই শিক্ষা গ্রহণে যদি সেশনজটে নষ্ট হয় গুরুত্বপূর্ণ সময়, তবে সেই মেরুদণ্ডের অবস্থা কী হবে? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট লখো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে—এ বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা যত তাড়াতাড়ি অনুধাবন করবেন, ততই আমাদের মঙ্গল। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতাও যে রয়েছে, তা স্বীকার করি। তারপরও সেশনজট ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার অনুরোধ থাকবে। শিক্ষা হোক আনন্দদায়ক! আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট দূর হোক। সেশনজট বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন।
তৌফিক সুলতান, শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
মন্তব্য করুন