

বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত সাতজন মুক্তিযোদ্ধার অন্যতম ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ঢাকায় ১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। মতিউর পাকিস্তান বিমানবাহিনী একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৬৩ সালের জুন মাসে কমিশন লাভ করেন। পরের বছর পেশোয়ারে জেট পাইলট নিযুক্ত হওয়ার আগে করাচিতে জেট কনভার্সন কোর্স সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছুটিতে এসে মতিউর রহমান স্থানীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। ভৈরবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। পরে পারিবারিক চাপে মে মাসে পাকিস্তান চলে যান। সেখানে তিনি বিমান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। তার লক্ষ্য ছিল, বিমান ছিনতাই করে সেটি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেবেন। ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট সকালে করাচির মশরুর বিমানঘাঁটি থেকে পাইলট অফিসার মিনহাজ রশিদের টি-৩৩ বিমান নিয়ে ওড়ার শিডিউল ছিল। মতিউর ছিলেন তার প্রশিক্ষক। টি-৩৩ বিমানের সাংকেতিক নাম ছিল ব্লু বার্ড। প্রশিক্ষণকালে মতিউর বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নিতে চেয়েছিলেন; কিন্তু পারেননি। বিমানটি বিধ্বস্ত হয় ভারতীয় সীমান্তের কাছে থাট্টায়। মতিউরের মৃতদেহ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পাওয়া গেলেও মিনহাজের লাশের কোনো হদিস মেলেনি। মতিউর রহমানকে দাফন করা হয় মশরুর বিমানঘাঁটির চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কবরস্থানে। দেশপ্রেম ও আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মন্তব্য করুন