

আজকাল অনিদ্রা যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের জন্য। ব্যস্ত জীবন, মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুমের সময়সূচি—সব মিলিয়ে রাতে ঘুম না আসা এখন এক সাধারণ সমস্যা। অনেকেই এর সমাধানে ঘুমের ওষুধের আশ্রয় নেন, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের বদলে প্রকৃতির দিকেই ফিরে যাওয়া শ্রেয়। কারণ আমাদের ঘরোয়া রান্নাঘরে আছে এমন কিছু সাধারণ খাবার, যা নিয়মিত খেলে অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়ে ঘুম হতে পারে গভীর ও প্রশান্তিময়। দেখে নিন সেই ছয় খাবারের তালিকা—
গরম দুধ-হলুদ
দুধে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন বাড়িয়ে ঘুম আনতে সাহায্য করে। এক কাপ গরম দুধে সামান্য হলুদ মিশিয়ে পান করলে শরীরের প্রদাহ কমে, মন শান্ত হয় এবং সহজে ঘুম আসে। প্রাচীন ঘরোয়া উপায় কিন্তু আজও কার্যকর হতে পারে আপনার জন্য।
কলা
কলা শুধু পেট ভরায় না, ভালো ঘুমের কারণ হতে পারে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম পেশি শিথিল করে। কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমায়। শুতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে একটি কলা খেলে শরীর ঘুম সহজে আসে।
গুড়
গুড়ে থাকা প্রাকৃতিক গ্লুকোজ রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে। সামান্য গুড় গরম দুধ বা জলের সঙ্গে খেলে মন শান্ত হয়। এতে ঘুম ভালো হয়। এ ছাড়াও গুড় হজমে সাহায্য করে। ফলে রাতের ঘুম আরও স্বস্তিদায়ক হয়ে ওঠে।
ওটস বা ডালিয়া
ওটস বা ডালিয়ায় জটিল কার্বোহাইড্রেট থাকে যা মেলাটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং হজমেও সাহায্য করে। রাতে হালকা গরম দুধ দিয়ে ডালিয়া বা ওটস খেলে তা শুধু পেট ভরায় না; বরং মস্তিষ্ককেও ঘুমের সঙ্কেত দেয়।
বাদাম ও কিশমিশ
আমন্ড ও আখরোটে আছে ম্যাগনেসিয়াম ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা স্নায়ুর উত্তেজনা কমিয়ে তাকে শান্ত করতে সাহায্য করে। কিশমিশের প্রাকৃতিক মিষ্টত্ব মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়। একমুঠো বাদাম ও কিছুটা কিশমিশ ঘুমের আগে খেলে, ঘুমের মান উন্নত হয়।
ভাত ও ডাল
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। ভাত-ডাল শুনলেই আমাদের গায়ে জ্বর আসে। কিন্তু এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের সমন্বয় শরীরে ট্রিপটোফ্যানের উৎপাদন বাড়ায়। যা ধীরে ধীরে শরীরকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। রাতে হালকা গরম ভাত ও ডাল খেলে ঘুম সহজে আসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ছয়টি খাবার নিয়মিতভাবে খাদ্যাভ্যাসে রাখলে ঘুমের ওষুধ ছাড়াই শরীর ও মন ফিরে পেতে পারে প্রাকৃতিক ঘুমের ছন্দ।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন