দৌড় শেষ করে দীর্ঘ সময় আকাশপানে চেয়ে কাকে যেন খুঁজছিলেন শাকারি রিচার্ডসন। একই সঙ্গে সৃষ্টিকর্তাকে উদ্দেশ করে কিছু একটা বলে ওঠেন। আর তা করবেন না-ই বা কেন? কিছুক্ষণ আগে তিনি রচনা করেছেন নতুন এক ইতিহাস।
এর জন্য ফিরে যেতে হবে তিন বছর আগে। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকের আগে হওয়া ট্রায়ালে নারীদের ১০০ মিটারের স্প্রিন্ট জয় করে সবাইকে চমকে দেন এই মার্কিন তারকা, যেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাথলেটিকসে আগমন ঘটেছে নতুন তারকার। আকস্মিকভাবে গুঁড়িয়ে যায় সবকিছু।
ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় অলিম্পিক শুরুর এক মাস আগে নিষিদ্ধ হন তিনি। শরীরে পাওয়া যায় গাঁজার নমুনা। এক মাস নিষিদ্ধ থাকার পর আবারও ফেরেন অ্যাথলেটিকসে। এবার তার ফেরা হয়েছে সত্যিকারের রানির মতো। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে রচনা করলেন নতুন ইতিহাস। ফাইনালে দৌড়ের শুরুতে তুলনামূলক কিছুটা পেছনে ছিলেন তিনি। কিন্তু পরে কী দৌড়টাই না দৌড়ালেন। ১০.৬৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে হয়ে গেলেন বিশ্বের দ্রুততম মানবী।
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ফেভারিট জ্যামাইকার স্প্রিন্টাররা। কিন্তু তাদের পেছনে ফেলে ১০০ মিটারে নতুন রানি বনে যান প্রত্যয়ী শাকারি। পেছনে ফেলেন শেরিকা জ্যাকসন (১০.৭২) ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ষষ্ঠবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আসা জ্যামাইকান শেলি অ্যান ফ্রেজার-প্রাইসকে (১০.৭৭)।
জেতার পর সগর্বে রিচার্ডসন ঘোষণা দেন, ‘আমি এখানে, আমিই চ্যাম্পিয়ন। আপনাদের সবাইকে তো আগেই বলেছিলাম। এটা প্রত্যাবর্তন নয়, আমি আগের চেয়ে আরও ভালো হয়েছি।’ সংবাদমাধ্যম ইউরো স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও বিশ্বের নতুন এ দ্রুততম মানবী নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন, ‘আমার অবাক লাগছে। মনে হচ্ছে, অবশেষে নিজের পরিশ্রমের ফল পেলাম। আমি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলাম। এই মৌসুমে আমার বিশ্বাসের জায়গাটা শক্ত রেখেছিলাম। জানতাম, অনুশীলন যে কাউকে সামনে এগিয়ে নেয়। আমি কৃতজ্ঞ সবার প্রতি, যারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন।’
মন্তব্য করুন