ফের দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় করোনা শনাক্তের পরীক্ষা। তবে সিলেটে নেই করোনা শনাক্ত করার পর্যাপ্ত পরিমাণ কিট। একই সঙ্গে করোনার বিষয়ে বিভাগীয় শহর সিলেটে নেই কোনো প্রচার-প্রচারণা। ফলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও শনাক্ত করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা টেস্ট করেছেন মাত্র ১ জন। তবে তার নেগেটিভ এসেছে।
নগরীর একাধিক বাসিন্দা জানান, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার না থাকায় বুঝতে পারছি না সিলেট নগরীতে কী পরিমাণ মানুষ এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। আর কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ফলে দ্রুত প্রচার-প্রচারণা শুরু না করলে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে করোনা সংক্রমণ। যদি সিলেটে নতুন আক্রান্ত রোগী থাকে, তাহলে মহামারি আকার ধারণ করবে, সেটি দ্রুত চিন্তা করা দরকার। সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় ও ভারতের সঙ্গে সীমান্ত থাকায় আরও বেশি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম সুমন বলেন, সরকারি নির্দেশনা আসামাত্র আমরা জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছি। মাইকিং করা, প্রয়োজন হলে মাস্ক বিতরণ, লিফলেট বিতরণ—এসব কার্যক্রম পরিচালনা করব। আগে দেখি সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে জুম মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত আমরা কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখব। আপাতত মানুষের মধ্যে পেনিক সৃষ্টি করতে চাচ্ছি না।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, বিশ্বের কয়েকটি দেশে আবার করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের প্রস্তুতি শুরু করেছি। আমরা র্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্টও শুরু করব। সংক্রমণ হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ কিট আমাদের কাছে নেই। আমরা দ্রুততার সঙ্গে কিট সংগ্রহ করছি। শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতাল করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছিল। সেটিকে আবারও করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যে রোগীদের ভর্তি করার প্রয়োজন হবে, তাদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। সেখানে আইসিইউ আছে। আশা করি আগের মতো আমরা সেবা দিতে পারব। ওসমানী হাসপাতালের পাশাপাশি শামসুদ্দিন হাসপাতালেও করোনা টেস্ট করা যাবে। বর্তমানে সিলেটে করোনার সংক্রমণ কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা টেস্ট না করলে বলতে পারব না।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সিলেটে এখনো সেরকম কোনো কিছু হয়নি। এক সপ্তাহের মধ্যেই করোনা টেস্টের কিট চলে আসবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ বলেন, করোনার বিষয়ে মঙ্গলবার সভা করেছি। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সবাই তাদের মতো করে মতামত ব্যক্ত করেছেন। আজকে (বুধবার) মেডিকেলে মিটিং হয়েছে। দ্রুতই আরেকটি মিটিং করে আমাদের অবস্থান আপনাদের বলতে পারব। পর্যাপ্ত কিট ও হাসপাতাল প্রস্তুত আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মিটিং চলছে, পরবর্তী সময়ে জানাতে হবে।
মন্তব্য করুন