ফরিদপুরের সালথায় মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত একটি ব্রিজের দুপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাতায়াতে অনুপযোগী অবস্থা। ৮ বছর ধরে ভোগান্তিতে সাত গ্রামের মানুষ ও স্কুলশিক্ষার্থীরা। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি স্কুলের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গট্টি ও আটঘর এ দুই ইউনিয়নের সীমান্তের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে মালঞ্চ বিল। বিলের উত্তর পাড়ে রয়েছে খোয়াড়, গোয়ালপাড়া, সেনহাটি ও ভাবুকদিয়া গ্রাম। আর দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে সিংহপ্রতাপ, নারানদিয়া ও মেম্বার গট্টি গ্রাম। এ সাতটি গ্রামে বসবাসরত বাসিন্দারা বেশিরভাগ কৃষক। গত ২০১১ সালে এ মালঞ্চ বিলের ওপর প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ২৭ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিজ। ব্রিজ নির্মাণের তিন-চার বছর পরই দুপাশের পাকা সংযোগ সড়ক বন্যায় পানির চাপে ভেঙে যায়। তারপর থেকে আট বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ব্রিজটি। যে কারণে ব্রিজের ওপর দিয়ে চলছে না কোনো ধরনের যানবাহন। ফলে ব্রিজটি স্থানীয় সাতটি গ্রামের মানুষের জন্য ১০ পয়সারও কোনো উপকারে আসছে না। বরং ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
স্থানীয় সমাজসেবক শাহাজাহান ও কলেজছাত্র নাজমুল হোসেন কালবেলাকে বলেন, দুই ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য ১৪ বছর আগে বুড়িদিয়া স্কুলের পেছনে মালঞ্চ বিলের ওপর ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করে সরকার। ব্রিজের দুই পাশে মাটি কেটে নির্মাণ করা হয় কাঁচা রাস্তা। পরে ওই রাস্তার ওপর ইট বিছিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচলে উপযোগী করে দেওয়া হয়। ফলে এসব গ্রামের কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে অনেক সুবিধা হয়। কিন্তু গত আট বছর আগে বিলের পানির চাপে ব্রিজটির দুপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে ধসে যায়। এরপর থেকে ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ব্রিজের দুপাশে সংযোগ সড়ক সংস্কারের দাবি জানাই।
স্থানীয় কৃষকরা কালবেলাকে জানান, সারাজীবন পাট-ধান ও পেঁয়াজ মাথায় করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছে এলাকার মানুষ। মালঞ্চ বিলের ওপর ব্রিজ হওয়ার পর কয়েক বছর মাথায় করে নিয়ে বাজারে ফসল বিক্রি করতে হয়নি। ভ্যান, নসিমন ও গাড়িতে করে কৃষিপণ্য বাজারজাত করা হয়েছে। কিন্তু সাত-আট বছর ধরে ব্রিজের দুপাশের সড়ক ভেঙে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সিংহপ্রতাপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহেবুল ইসলাম ও কাজী রুবেল কালবেলাকে বলেন, মালঞ্চ বিলের ওপর নির্মিত ব্রিজটি আমাদের স্কুলের পাশেই। এ ব্রিজ দিয়ে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। ব্রিজের দুপাশের সড়ক ভেঙে যাওয়ায় আমাদের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুলশিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সড়ক সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
সালথা উপজেলা প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া কালবেলাকে বলেন, ব্রিজটির দুপাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার জরুরি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ব্রিজটির দুপাশে সংযোগ সড়ক সংস্কারের জন্য। এরই মধ্যে সংস্কারের জন্য ঢাকায় প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালি কালবেলাকে বলেন, দ্রুত সরেজমিন ব্রিজটি পরিদর্শনে যাব। তারপর মানুষের চলাচলের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমরা কাজ করব।
মন্তব্য করুন