রাজধানীর ওয়ারীর হাটখোলা রোডে সৈয়দ রেদোয়ান মাওলানা (১৭) নামে এক কিশোরকে ৬ থেকে ৭ জন মিলে মারছিল। মাথায় হেলমেট দিয়ে একের পর এক আঘাত করছিল তারা। ইট দিয়ে মাথায় আঘাতেরও চেষ্টা করা হয়। একজনকে নির্মমভাবে মারতে দেখে এগিয়ে আসে স্থানীয়রা। ছুটে আসেন একজন ট্রাফিক সার্জেন্টও। সবাই মিলে হামলাকারীদের প্রতিহত করায় রক্ষা পায় ভুক্তভোগী কিশোর। ঘটনাস্থল থেকে দুজন হামলাকারীকে পুলিশে দেওয়া হয়।
রোববার রাত ৯টার দিকে ওয়ারীর ইলিশিয়াল ভবনের পেছনের গলিতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, এই এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য প্রতিদিনের ঘটনা। মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার নৃশংসতার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে আর কেউ হত্যার শিকার না হোক, সেই জায়গা থেকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এলাকার বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগী কিশোর রেদোয়ানকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি চিকিৎসাধীন আছে। আর আটক দুজনের বিরুদ্ধে ওয়ারী থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তৃতীয় আরেকটি গ্রুপের সঙ্গে ঝামেলাকে কেন্দ্র করে রেদোয়ানকে হামলা করে কিশোরদের একটি গ্রুপ।
ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাকারিয়া খান জানান, হামলার সময় ঘটনাস্থলেই দুজনকে আটক করা হয়। তাদের নাম আব্দুর রহিম মাহি (১৯) ও সাব্বির হোসেন রাতুল (১৯)। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাকি হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এই মারধর ও প্রতিরোধের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। এতে আটক দুই যুবককে উদ্দেশ্য করে কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, তোদের মতো লোকদের জন্যই দেশটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তোদের কোনো ছাড় নেই। স্থানীয়রা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য নতুন নয়। তবে পুলিশের পাশাপাশি এবার জনতাও শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এমন প্রতিরোধ ভবিষ্যতে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বাড়াবে বলে তারা আশা করছেন।
ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ বলেন, আহত ও অভিযুক্ত দুজনই শিক্ষার্থী। তাদের পূর্বপরিচয় ছিল কি না, কিংবা ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ঘটনাটির ভয়াবহতা এটাই প্রমাণ করে, স্থানীয়রা এবার আর নীরব ছিল না। তারা একযোগে প্রতিরোধ করেছে, সেটাই সবচেয়ে ইতিবাচক দিক।
মন্তব্য করুন