ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) নির্বাচন আসছে ৯ মার্চ। এর তপশিল ঘোষণার পর নগরজুড়ে পোস্টার সাঁটানোর মাধ্যমে অবস্থান জানান দিচ্ছেন সম্ভাব্য মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে আবারও প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান মেয়র ইকরামুল হক টিটু। এক সাক্ষাৎকারে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে বিগত সময়ে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও আগামীর নানা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
মেয়র টিটু বলেন, আমি সার্বক্ষণিকভাবে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে কাজ করেছি। মেয়র হিসেবে নগরবাসীর সব সেবা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য মেনেই কাজ করেছি। প্রতিনিয়তই আমি নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া নগরের উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক, ধর্মীয়সহ যে কোনো প্রয়োজনে আমি নগরবাসীর পাশে থেকে তাদের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করেছি।
নগরীর আগের চিত্র স্মরণ করিয়ে মেয়র বলেন, আগে ময়মনসিংহ শহরের মোড়ে মোড়ে ময়লা-আবর্জনার দীর্ঘ স্তূপ দেখা যেত। আমি দায়িত্বে আসার পর এখন সেই রূপ আর নেই। আগে একটু বৃষ্টি হলেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় দুই-তিন দিন পানি জমে থাকত। এখন অনেকাংশেই সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। তবে কিছু অংশে এখনো সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধানের জন্য আমাদের কাজ চলছে।
করোনা ও বৈশ্বিক সংকটে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাঁচ বছরে আসলে সব কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আমরা যদি স্বাভাবিক গতিতে কাজ করতে পারতাম তাহলে আমাদের এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে আরও বহুদূর যেতে পারতাম। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অনেক কাজই গুছিয়ে এনেছি। এরই মধ্যে ৩৫৮ কিলোমিটার সড়ক ও ২৪৯ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করেছি। পাশাপাশি ১৭১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক এলইডি সড়কবাতি। জলাবদ্ধতা নিরসনে অব্যাহত অভিযানে ১৬ কিলোমিটার খাল ইতোমধ্যে দখলমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রান্তিক ও দরিদ্র গোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে একটি নগর মাতৃসদন ও তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র করেছি। যেখানে প্রায় আড়াই হাজার দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছে। প্রতিদিন চার শতাধিক মা ও শিশু কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন।
যানজট সমস্যার ব্যাপারে ইকরামুল হক টিটু বলেন, সিটি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে লোকজন নগরের দিকে আসছে। এ জনগণের চাপ সামাল দিতে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক যান বেড়েছে। নগরবাসী পাশে থাকলে আগামীতে যানজট সমস্যার সমাধান করতে পারব।
মেয়র আরও বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা নিরসন, স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করার বিভিন্ন পদক্ষেপ এরই মধ্যে হাতে নিয়েছি। নগরটিতে একটি শিশু পার্কের প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া বাস ও ট্রাক টার্মিনাল, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, আলোকিত নগর, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতা উন্নয়ন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। এগুলো অনেকাংশে আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। অনেক কাজ প্রক্রিয়াধীন। বাকি কাজ শেষ হলে নগরটি আমূল পরিবর্তিত হবে।
নগরবাসী আরও সেবা করার সুযোগ দেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মসিকের এই প্রথম মেয়র বলেন, দীর্ঘদিন নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করে সামাজিক প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করেছি। সে দাবি নিয়েই আবারও প্রার্থী হচ্ছি। নিশ্চয়ই আমার দীর্ঘদিনের কর্মের মূল্যায়ন নগরবাসী করবেন এবং আগামী দিনে আমাকে আবারও সেবা কাজের সুযোগ দেবেন।