রাজধানীর দক্ষিণখানে তিন বছর আগে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয় ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে। এ মামলায় প্রধান আসামি আমিনুল ইসলাম ওরফে জাপানি হান্নানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুই বছর আগে চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এরপর ১০ মাস কেটে গেছে। এই সময়ে বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ ছাড়া বিচার কাজ আর এগোয়নি, যা নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
মামলার বাদী হারুন অর রশিদ কালবেলাকে বলেন, বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কী আর বলব; আমাদের তো কিছু করার নেই। ভাইকে প্রকাশ্যে হত্যা করার পর তিন বছর হলো। এখনো বিচার পেলাম না। একের পর এক আদালত পরিবর্তন হওয়ায় ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি চাই।
জানা গেছে, বর্তমানে মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। সর্বশেষ গত ১০ মার্চ আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বাদীকে জেরা করেন। এরপর আদালত ২৫ এপ্রিল এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন। গত বছরের ১৮ মে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত বিচার কাজ শুরুর আদেশ দেন। ২২ জানুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
সৌদি প্রবাসী সোহেল ১৫ বছর আগে দক্ষিণখানের আইনুছবাগে ৩ কাঠা জমি কেনেন। এ জমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২১ মার্চ সিমেন্ট, বালু ও ইট আনেন। জাপানি হান্নানের নেতৃত্বে আসামিরা সেগুলো নিয়ে যায়। তারা ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ নিয়ে বিরোধে জাপানি হান্নান ব্যবসায়ী রশিদ ও সোহেলকে গুলি করে। এতে রশিদ মারা যান। দক্ষিণখানের নদ্দাপাড়া এলাকায় তার রড-সিমেন্টের দোকান ছিল।
এ ঘটনায় হারুন অর রশিদ জাপানি হান্নানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন। এরপর ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক আজিজুল হক মিঞা ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। অন্য আসামিরা হলো জাপানি হান্নানের ছেলে ইকরামুল ইসলাম, হান্নানের ভাই শফিকুল ইসলাম, আল আমিন, জহিরুল ইসলাম রিপন প্রধান, খোরশেদ আলম, মোশারফ হোসেন, নুরনবী, সবুজ, হাবিবুর রহমান, সজল, ধলা মিয়া ও আব্দুল মালেক। এর মধ্যে সজল পলাতক ও হান্নান কারাগারে। অন্যরা জামিনে রয়েছে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল্লাহ আবু কালবেলাকে বলেন, মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। অন্য সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করা হবে। আসামিপক্ষের আইনজীবী পীযূষ কান্তি রায় বলেন, এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান। জাপানি হান্নান কারাগারে।