রাশিয়ার কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার মধ্যেই পশ্চিমা মিত্রদের কাছে সামরিক সহায়তার জন্য একপ্রকার মরিয়া হয়ে আবেদন জানায় ইউক্রেন। শঙ্কা দেখা দেয় পশ্চিমা সহায়তা না পেলে চলতি বছরের মধ্যেই যুদ্ধে হেরে যেতে পারে কিয়েভ, এমনকি হারাতে পারে বিস্তৃত ভূখণ্ডও।
এমন পরিস্থিতিতে কিয়েভের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রশ্ন হলো এ সহায়তা কি ইউক্রেনকে রক্ষা করতে পারবে?
টানা তিন বছর পরাশক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্র ইউক্রেন। আর এর পেছনে সবচেয়ে বড় মদদদাতা হিসেবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটো।
যদিও গোটা পশ্চিমা বিশ্বকে সঙ্গে নিয়েও এক পুতিনের বিরুদ্ধে খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পারছেন না প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এমন পরিস্থিতিতে কিয়েভকে টিকিয়ে রাখতে নতুন করে ৬১ বিলিয়ন ডলারের বিশাল মার্কিন সামরিক সহায়তা কিছুটা সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন সিনেটে সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন হওয়ার কারণে ইউক্রেনের সেনাদের নৈতিক মনোবল চাঙা হবে, তাতে করে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি উন্নতি হবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গোলাবারুদ রেশনিং করে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছিলেন তারা। তবে ইউক্রেনকে দেওয়া এসব সহায়তা প্যাকেজ কতটা টেকসই হবে, এ প্রশ্নটি কেবল অর্থনৈতিক প্রশ্ন নয়। এটা রাজনৈতিক ইচ্ছারও বিষয়।
এশিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা আটকে থাকার পেছনে চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হিসাব–নিকাশ কাজ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, নভেম্বর মাসের নির্বাচনের পর ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরার সম্ভাবনা আছে।
ইউক্রেন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বিদ্বেষ বেশ সুপরিচিত। পাশাপাশি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সখ্যের কারণে ইউক্রেন সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মৈত্রী বেশ অনিশ্চয়তায় পড়বে।
অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউক্রেনের জন্য সহযোগিতা প্যাকেজ পাস করাতে নতুন সমস্যায় পড়তে হবে।
এর আগে ২৭টি দেশের মধ্যে শুধু হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ওরবান ইউক্রেনকে সহায়তা করার বিরোধিতা করতেন। এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো।
বিশ্লেষকরা মনে করছে, রাশিয়া যেভাবে তার প্রতিরক্ষা খাত শক্তিশালী করেছে এবং ব্যাপকভাবে সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উৎপাদন বাড়িয়েছে, সেই তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমরশিল্প গতিশীল হতে পারেনি।
এ ছাড়া মস্কো ইরান, উত্তর কোরিয়া ও চীনের সমর্থন ও অস্ত্র-গোলাবারুদ পেয়ে আসছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তাদের অস্ত্রশস্ত্র-গোলাবারুদ উৎপাদনের সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্তব্য করুন