মনজু বিজয় চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১২ এএম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

রোদে পুড়ছে চা পাতা গজাচ্ছে না কুঁড়ি

শ্রীমঙ্গলের চা বাগান
রোদে পুড়ছে চা পাতা গজাচ্ছে না কুঁড়ি

মৌলভীবাজারে প্রচণ্ড গরমে চা গাছে আসছে না নতুন কুঁড়ি। কোথাও কোথাও তীব্র রোদে পুড়ে যাচ্ছে চা গাছের পাতা। দুহাত ভরে চা পাতা তুলে আনার সময় শ্রমিকরা বাগান নির্ধারিত পাতাই (প্রতিদিন কমপক্ষে ২৪ কেজি) জমা করতে পারছেন না। ফলে তাদের ‘হাজিরা’ বা সাপ্তাহিক বেতনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাপপ্রবাহের এ প্রভাব পড়েছে জেলার ৯২টি চা বাগানে। এ অবস্থা থেকে চা বাগানকে রক্ষা করতে শ্রমিক, বাগানমালিকরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত চা গাছ তাপ সহ্য করতে পারে। এর ওপর গেলেই খরায় পড়বে চা।

বিভিন্ন চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রচণ্ড রোদে শ্রমিকরা পাতা তুলছেন। অনেকেই ঘামে ভিজে গেছেন। তবে যেসব সেকশনে সেড টি বা ছায়া বৃক্ষ কম; সেসব সেকশনে গাছের পাতায় ধরেছে ভাঁজ। যাকে চায়ের ‘বাঞ্জি দশা’ বলা হয়। এ ছাড়া রেড স্পাইডারের আক্রমণে গাছে ধরেছে ‘লাল রোগ’। আবার কোথাও গাছের পাতা মরে ঝরে যাচ্ছে। এতে চা উৎপাদন মৌসুম শুরুতেই নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে প্রুনিং করা কয়েকটি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, গাছে এখনো ‘সুট’ (নতুন কুঁড়ি) আসেনি।

বাগানের শ্রমিক বাসন্তী বাউরী বলেন, বৃষ্টি না হলে এ গাছে ‘সুট’ আসবে না। যে সময় নতুন পাতায় হাত ভরে যাওয়ার কথা, সে সময়ে নতুন সুটের (কুঁড়ি) জন্য বাঞ্জি দশায় আক্রান্ত পাতা তুলে ফেলতে হচ্ছে। অন্যদিকে পাতা কম থাকায় প্রতিদিনের ন্যূনতম লক্ষ্য ২৪ কেজি পাতাও ওঠাতে পারছি না।

চা শ্রমিক অলকা বালা জানান, অনেকেই ২৪ কেজির ওপর পাতা তোলেন। এর বেশি ওঠালে অতিরিক্ত টাকা পান। তবে এখন ২০ কেজির ওপর কেউ পাতা ওঠাতে পারেন না। প্রচণ্ড রোদে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে এখন পাতা পান ১০ থেকে ১৫ কেজি। আর পাতা চয়নের পাশাপাশি গাছ রক্ষায় সার, পানি দেওয়াসহ তাদের করতে হচ্ছে প্রতিরক্ষামূলক বাড়তি কাজও।

শ্রীমঙ্গল জেরিন চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা জানান, বর্তমানে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে ৩৭ ডিগ্রির ওপর। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে এ শিল্প।

বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট অঞ্চলের ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান গোলাম মো. শিবলী বলেন, ‘চায়ের জন্য ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উত্তম। তবে সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত চা গাছ তাপ সহ্য করতে পারে। এর ওপর গেলেই খরায় পড়বে চা।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ; সেহেতু খরা মৌসুমের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিনই চা গবেষণা কেন্দ্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এবার ইরান-ইয়েমেন থেকে যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হতে পারে

দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, মামলায় আসামি ১৫৯

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর গোয়েন্দাপ্রধান নিহত

দাউ দাউ করে জ্বলছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের বিমানবন্দরে আঘাত হানল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র

নেতানিয়াহুর বাসভবন এলাকায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

এবার ইসরায়েলিদের ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চল ছাড়তে বলল ইরান

মুসিয়ালা ম্যাজিক! অকল্যান্ডকে ১০-০তে গুঁড়িয়ে দিল বায়ার্ন

ইসরায়েলিদের পালাতে বলল সেনাবাহিনী

ইরানের হাইপারসনিক ইসরায়েলের হাইফা তেল আবিব ও নেগেভ বিমানঘাঁটিতে আঘাত করেছে

১০

কী কথা বললেন এরদোয়ান-ট্রাম্প?

১১

ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ছাত্রের হাত ভেঙে দিলেন মাদ্রাসা শিক্ষক

১২

কোল্ড স্টোরেজে ভাড়া বৃদ্ধি প্রতিবাদে আলু চাষিদের বিক্ষোভ

১৩

নরসিংদীতে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ৪

১৪

জনগণই বিএনপির মূল শক্তি : খোকন

১৫

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হবে আন্তর্জাতিক টুরিস্ট স্পট : চসিক মেয়র

১৬

দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, যুবদল নেতাকে বহিষ্কার

১৭

সিলেট ওসমানী মেডিকেলে কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

১৮

‘৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পলায়ন বাংলাদেশের বিপ্লবের ইতিহাসের স্বর্ণালী দিন’

১৯

খামেনির ওপর হামলার বিষয়ে যে অবস্থান নিলেন ট্রাম্প

২০
X