ভয়াবহ বন্যায় দুই দেশের মধ্যকার সংযোগকারী প্রধান সেতু ভেসে গেছে। এ ঘটনায় এক ডজনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। আকস্মিক বন্যায় দুই দেশের মধ্যকার সংযোগকারী সেতুটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকস্মিক বন্যায় চীন-নেপাল সংযোগকারী প্রধান সেতু ধসে গেছে। নেপালের ভোটেকোশি নদীর ওপর এ সেতুটি অবস্থিত। এ ঘটনায় অন্তত ১৮ জন নিখোঁজ হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ১২০ কিমি উত্তরে রাসুওয়াগাড়িতে অবস্থিত এ সেতুটি ধসে পড়ে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, নিখোঁজদের মধ্যে ১২ জন নেপালি এবং ৬ জন চীনা নাগরিক রয়েছেন। বন্যায় নদীর তীরের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ও কাস্টমসে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক ও বৈদ্যুতিক গাড়িও ভেসে গেছে।
চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, চীনের পাহাড়ি সীমান্তের দিকে আরও ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা কাঠমান্ডুর উত্তরাঞ্চলে নির্মাণাধীন ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোতে কর্মরত ছিলেন। রাসুওয়া জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অর্জুন পাউডেল জানিয়েছেন, নদীর স্রোতে চীন থেকে আসা পণ্যের বেশ কিছু কন্টেইনারও ভেসে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকাজে সেনা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কয়েকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ৯৫ জন উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং আরও উদ্ধারকর্মী যোগ দিচ্ছেন। সেতুটি ধসে যাওয়ায় চীন-নেপাল বাণিজ্য কার্যত স্থগিত হয়েছে। এখন চীনের পণ্য ভারত হয়ে নেপালে আসতে হবে।
নেপালের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, বন্যার কারণ হিসেবে তিব্বতে কোনো হিমবাহ হ্রদ উপচে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ নদীর অববাহিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টি হয়নি। স্যাটেলাইটভিত্তিক সংস্থা সেন্টিনেল এশিয়ার সহায়তায় কারণ যাচাই করা হচ্ছে।
মৌসুমী বৃষ্টির কারণে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেপাল প্রায়ই বন্যা ও ধসের কবলে পড়ে। একই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানেও বিপর্যয় চলছে। ভারতের হিমাচল প্রদেশে গত সপ্তাহে ভারি বৃষ্টিতে ২৩টি আকস্মিক বন্যা ও ১৬টি ভূমিধসে বহু ঘরবাড়ি, সেতু ও রাস্তা ভেসে গেছে এবং অনেকেই নিখোঁজ।
এছাড়া পাকিস্তানেও ২৬ জুন থেকে বন্যা, ধস ও ঘরধসে অন্তত ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। উত্তরাঞ্চলের গিলগিত-বালতিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় হিমবাহ হ্রদ উপচে বন্যার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন