বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সরকার সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাবন্দি করে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। আমাদের নেতা তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসনে রাখা হয়েছে। আমাদের এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যাদের নামে মিথ্যা মামলা নেই। আজকে ৪০ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। কারণ, তারা জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ১০টি আসনও পাবে না।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গোপীবাগে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
‘অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির’ প্রতিবাদে গতকাল দেশের সব বিভাগে পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এর অংশ হিসেবে গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি গোপীবাগের সাদেক হোসেন খোকা রোড থেকে দোলাইরপাড় পর্যন্ত পদযাত্রা করে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে নাবিস্কো সাতরাস্তা মোড়, হাতিরঝিল মোড় ও এফডিসি হয়ে সোনারগাঁও হোটেল সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত ‘পদযাত্রা’ হয়েছে।
গোপীবাগের পদযাত্রার আগে সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আবুল বাশার, শিরিন সুলতানা, হাসান মামুন, মহানগর বিএনপির নবীউল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, লিটন মাহমুদ, তানভীর আহমেদ রবিন, আরিফা সুলতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপন, অঙ্গসংগঠনের সাদেক আহমদ খান, হাসান জাফির তুহিন, ইসহাক সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওবায়দুল কাদের, আপনারা গদি ও পুলিশ ছেড়ে মাঠে আসেন। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। দেখবেন কার কত শক্তি? নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। আজকে গোটা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে মানুষ ঠিকমতো ভোট দিতে পারে না। সিটি নির্বাচনে আবারও তা প্রমাণিত হলো। বরিশালে মেয়র প্রার্থীকে তারা পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলছে, ‘কেন তিনি কি মারা গেছেন?’ আর এই সরকার বলছে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে!
জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন না: আমীর খসরু
মহানগর উত্তরের কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত দল। তাদের রাজনীতি আর নেই। এরা বিদ্যুৎ চোর, ভোট চোর, টাকা চোর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশকে বলব, জনগণের এই আন্দোলনে শামিল হয়ে যান। এই আন্দোলন সফল হলে এবং দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে যারা সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত আছেন, তারা সাংবিধানিক দায়িত্ব নির্দ্বিধায় পালন করতে পারবেন।
মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, আসাদুজ্জামান রিপন, কামরুজ্জামান রতন, শামীমুর রহমান শামীম, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, তাবিথ আউয়াল, মামুন হাসান, সুলতানা আহম্মেদ প্রমুখ।
সরকারকে বিদায় নিতেই হবে: প্রিন্স
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে গতকাল ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল থেকে পদযাত্রা বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে পদযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট চুরি ও জোরজবরদস্তিমূলক ক্ষমতায় আছে। তারা আবারও ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে ফন্দিফিকির করছে। এবার তাদের আর রক্ষা নেই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি না মানলে এবার তাদের বিদায় নিতেই হবে। এ সময় আর বক্তব্য দেন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, শরীফুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী আলম প্রমুখ।
এ ছাড়া সিলেট, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ মহানগরে পদযাত্রা করেছে বিএনপি।
মন্তব্য করুন