ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান বদলের পর এবার আরও এক বড় বিশ্বশক্তি চীন প্রকাশ্যেই তার অবস্থান ঘোষণা করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে যুদ্ধ অবসান নিয়ে ওয়াশিংটন-মস্কোর চলমান আলোচনার প্রতি সমর্থন জানান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। চীনের এমন প্রকাশ্য ঘোষণায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আরও একা হয়ে পড়লেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস দুদা যুদ্ধ অবসানের আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহযোগিতা করতে জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন জেলেনস্কিকে আরও নমনীয় হতে হবে।
জোহানেসবার্গে জি২০ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘ইউক্রেনে শান্তির জন্য সহায়ক সব প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায় চীন। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সম্প্রতি যে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, তাকেও সমর্থন জানায়।’ বেইজিং এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিতে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক করেন রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিবিদরা। সেই বৈঠকে আমন্ত্রণ পায়নি ইউক্রেন। এই বৈঠকের পর থেকে ইউক্রেন ও তার প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে আগ্রাসী মন্তব্য করে যাচ্ছেন ট্রাম্প। জেলেনস্কি জোর করে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন, এই ইঙ্গিত দিয়ে তাকে ‘একনায়ক’ বলে অভিহিত করেন তিনি। আবার যুদ্ধে সহায়তার বিনিময়ে কিয়েভকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের খনিজসম্পদ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে, চীন ও রাশিয়া দীর্ঘদিনের মিত্র রাষ্ট্র। জি২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করে ওয়াং ই বলেন, এই মিত্রতা আরও ওপরের স্তরে যাচ্ছে এবং বিস্তৃত হচ্ছে। শিগগির মস্কোতে এই দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হবে বলে জানান ল্যাভরভ।
অন্যদিকে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস দুদা যুদ্ধ অবসানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করতে ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘কয়েক মিনিট আগে
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। আমি তাকে বলেছি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া এই রক্তপাত বন্ধ ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সন্দেহ নেই যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে চান।’ কাজেই জেলেনস্কিকে আরও নমনীয় হয়ে শান্তি আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সহযোগিতা করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।